খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) ‘হেলদি ম্যানগ্রোভস অ্যান্ড সাসটেইনেবল ফিশারিজ ফর ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট কোস্টাল কমিউনিটি ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম শুরু হয়েছে। সিম্পোজিয়ামে মোট ১৩৩টি গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করা হবে এবং সিম্পোজিয়াম শেষে একটি সুপারিশমালা গৃহীত হবে।
ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিএমজেড) আর্থিক সহযোগিতায় আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেদারল্যান্ডস, পাপুয়া নিউগিনি, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক এবং উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা সশরীরে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া স্পেন, যুক্তরাজ্য ও থাইল্যান্ডের গবেষকরা সিম্পোজিয়ামে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
খুবির ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি (এফএমআরটি) ডিসিপ্লিন, গ্লোবাল ন্যাচার ফান্ড এবং বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (বেডস) যৌথ উদ্যোগে বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধন হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, ম্যানগ্রোভ ও ফিশারিজের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এই দুইয়ের সঙ্গে উৎপাদন, তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা হ্রাস-বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাত, জলবায়ুগত পরিবর্তন, দূষণসহ নানামাত্রিক প্রভাব সম্পৃক্ত। ঠিক আমরা জানি না কোন কারণে কী প্রজাতির ম্যানগ্রোভ বা মাছের উৎপাদন কমছে বা বাড়ছে। কী কী প্রভাব উপকূলের জল, জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ওপর পড়ছে। তবে আমরা জানি যে ম্যানগ্রোভ ও মাছচাষের সঙ্গে বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল। উৎপাদন কমলে বা বাড়লে তা তাদের জীবন-জীবিকার ওপরও প্রভাব ফেলে। সামগ্রিকভাবে এসবের মধ্যে শৃঙ্খল বা বন্ধন কাজ করে। তা নিরূপণ জরুরি। দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল উপকূলীয় অংশে ম্যানগ্রোভ ও মাছ বড় সম্পদ। এর ওপর আর্থসামাজিকসহ নানামাত্রিক উপযোগিতা নির্ভর করে।
উপাচার্য আরও বলেন, স্বাস্থ্যকর ম্যানগ্রোভ ও টেকসই মৎস্যচাষের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্রে গবেষণা প্রয়োজন। এই আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে যেসব বিষয়ে গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করা হবে, তার ফাইন্ডিংস থেকে অনেক তথ্য-উপাত্ত জানা যাবে। একই সঙ্গে সিম্পোজিয়াম শেষে যে সুপারিশমালা গ্রহণ করা হবে, তা ভবিষ্যতে গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার নতুন দিকনির্দেশনা দেবে বলে আশা করছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক ও উপপ্রধান বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রউফ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিসিপ্লিন প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সরোয়ার।
সিম্পোজিয়ামে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার জেমস কুক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নরম্যান সি ডিউক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর তিনটি টেকনিক্যাল সেশন ও একটি পোস্টার সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা