আপডেট : ৪ মার্চ, ২০২৩ ১০:৪৫
১৩২ রানে হারের পর বোলারদের দুষলেন তামিম
ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৩২ রানে হারের পর বোলারদের দুষলেন তামিম

ইংল্যান্ডের রান পাহাড়ে চাপা পড়েছে বাংলাদেশ। ছবি: এএফপি

ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ে এসে সুবিধা করতে পারেনি, ঘরের মাঠে টানা সাতটি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ইংল্যান্ডের সঙ্গে পেরে উঠলেন না তামিম ইকবালরা। ঘরের মাঠে নিজেদের সর্বশেষ সিরিজটিও ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ।

কালকের আগে ২০১৬ সালে যেবার ইংল্যান্ডের কাছে হারে বাংলাদেশ, সেবারও ইংলিশের নেতৃত্বে ছিলেন জস বাটলার। কাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সিরিজ জিততে টসের সময় বাটলার কি তবে ‘মাউন্ড গেম’ খেলেছিলেন? ১৩২ রানের হারের পর তামিম ইকবালের উত্তর শুনলে সেটাই মনে হবে।

মিরপুরের রহস্যে ঘেরা স্পিন-সহায়ক মন্থর উইকেটে টস হেরে বাটলার বলেন, ‘আমরা টস জিতে ব্যাট করতে চেয়েছিলাম।’ টসে জিতেও প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠানো তামিম বললেন, ‘প্রতিপক্ষ অধিনায়ক কী বলেছে তা নিয়ে একদমই চিন্তিত নই। সে হয়তো বলেছে আগে ব্যাট করতে চেয়েছিল। আমিও অনেক সময় টস হেরে এমন কথা বলেছি। তো এটি আমার কাছে তেমন চিন্তার কিছু নয়।’

কিন্তু যা হলো সেটাকে ঠিক কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন? আগে বল করেও উইকেট থেকে একেবারেই সুবিধা আদায় করতে পারেননি বাংলাদেশি বোলাররা। মিরপুরের উইকেট যাদের নখদর্পণে, সেই সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসানদের পিটিয়ে ছাতু বানিয়ে ৩২৬ রান করে ইংল্যান্ড। এমন ঘটনা মিরপুরে গত পাঁচ বছরে দেখা যায়নি।

তামিমের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাটলাররা উইকেট বুঝতে পারলেও কি আপনাদের সিদ্ধান্তে ভুল ছিল? আগের ম্যাচেই বোলারদের প্রশংসা করলেও কাল দুষলেন তামিম, ‘আমি ও আমার ম্যানেজমেন্টের মনে হয়েছে, উইকেট কিছুটা চিটচিটে ছিল। তবে যতই চিটচিটে ভাব থাকুক অথবা সাহায্য থাকুক, আপনি ঠিক জায়গায় বোলিং না করলে মার খাবেন।’

তামিমের দাবি, ‘যখন টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিই, তখন উইকেটে যথেষ্ট সাহায্য ছিল। আমরা আরও ভালো বল করতে পারতাম। কিন্তু আমরা প্রথম ৪-৫ ওভার ভালো বল করিনি। এর বেশি কিছু বলার নেই। আমরা ভালো বোলিং করিনি।’

প্রথম ওয়ানডেতে শুরুতে বল ভালো ব্যাটে এলেও ৩০ ওভার পর অর্থাৎ সূর্যের তেজ কমে গেলে বদলাতে শুরু করে উইকেটের চরিত্র। এটাই মূলত চিরাচরিত মিরপুর। কাল টসের সময় তামিম নিজেই জানিয়েছিলেন, ঠিক প্রথম ম্যাচের মতো না দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেট। এখানে স্পিনাররা সাহায্য পাবেন না। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের তিন স্পিনার ২৫ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৯৯ রান, পেয়েছেন ৫ উইকেট। তা যদি নাও হতো, মিরপুরে ৩২৭ তাড়া তো আর মুখের কথা নয়।

এই মাঠে তিন শ ঊর্ধ্ব রান তাড়া করে জয়ের ঘটনা বিরল। মোটে হয়েছেই দুবার, সর্বশেষ ঘটেছিল প্রায় ৯ বছর আগে। নিজেদের ভাবনা জানিয়ে তামিম বলেন, ‘আজ যে ধরনের উইকেট ছিল রান যদি ২৬০-২৭০-এর মধ্যে রাখতে পারতাম, তাহলে এটা আমরা তাড়া করতে পারতাম।’

উইকেট যেমনই হোক। সেখানে কীভাবে খেলতে হয় সেটা প্রতি ম্যাচে দেখাচ্ছেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ম্যাচে ডাভিড ম্যালানের পর কাল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন জেসন রয়। সাধুবাদ জানালেন তামিমও, ‘ওরা যেভাবে খেলেছে, কৃতিত্ব দিতেই হবে। ওরা সুযোগ নিয়েছে। সুইপ খেলেছে, রিভার্স সুইপ খেলেছে। এগুলো কাজে লেগেছে। ওদেরকে কৃতিত্ব দিতে হবে।’

মিরপুরের কীভাবে রান বের করতে হয় সেটা ম্যালান-রয়রা জানলেও দিনের পর দিন এই উইকেটেকে খেলে তার চরিত্র পড়তে পারেন না মুশফিক-রিয়াদরা। যে কারণে অধিনায়ক হয়ে প্রথমবার ঘরের মাঠে সিরিজ হেরেও তামিমকে উইকেট নিয়ে নিজের মন্তব্যে অটল থাকতে হয়!