আপডেট : ৪ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৫১
‘আঁর বইনোরে কী জবাব দিইয়ুম যে’
প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

‘আঁর বইনোরে কী জবাব দিইয়ুম যে’

‘ওবা (ও বাবা), কিল্লাই ফালাই গেলাগোই, ক্যানে গেলা গই? আঁরারে রাখি কিল্লাই গ্যালা? এখন আঁর বইনোরে কী হইয়ুম দে? কী জবাব দিইয়ুম যে?’

শনিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে জরুরি বিভাগের বারান্দায় এভাবেই বিলাপ করছিলেন মরিয়ম আক্তার। বিলাপ করতে করতে বার বার বাবার কথা বলছিলেন তিনি। তার বাবা ৫০ বছর বয়সী শামসুল আলম সীতাকুণ্ডের কদম রসুল এলাকায় অক্সিজেন বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: কারও হাত-পা উড়ে গেছে, কারও নাড়ি-ভুড়ি

সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ, নিহত ৪

হাসপাতালে মরিয়মের পাশেই মুখে হাত দিয়ে বসে আছেন তার ছোট ভাই আলমগীর। পরিবারের সবার ছোট আলমগীর পড়েন একাদশ শ্রেণিতে। কীভাবে কী হয়ে গেলো তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। আলমগীরের মুখে কোনো কথা নেই। জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিচ্ছেন ইশারায়। বিস্ফোরণে নেমে আসা হঠাৎ ঝড়ে বাকরুদ্ধ তিনি। যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না বাবা আর নেই।

মরিয়মের অদূরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মরিয়মের স্বামী মো. নাছির। তার সঙ্গে কথা হয় দৈনিক বাংলার। তিনি জানান, শামসুল আলমের বাড়ি সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। নির্মাণ কাজে কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ঘটনার সময় বিস্ফোরণস্থল সীমা অক্সিজেন প্ল্যাট থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার পাশে ছিলেন তিনি। বিস্ফোরণে তীব্রতায় একটি ধাতব টুকরো উড়ে গিয়ে পড়ে তার মাথার উপর। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিস্ফোরণে নিহত শামসুলের চার সন্তানের মধ্যে তিনজন মেয়ে। তাদের মধ্যে মরিয়ম দ্বিতীয়। আলমগীর সবার ছোট। শ্বশুরের মৃত্যুর পর আলমগীরের পড়াশোনার খরচ ও পরিবারের ভরণপোষণ কীভাবে চলবে তা নিয়েও চিন্তিত মেয়ে জামাই নাছির।