আপডেট : ৮ মার্চ, ২০২৩ ২১:৫৩
নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে হামলা: ইউক্রেনপন্থি গোষ্ঠীর জড়িত থাকার ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে হামলা: ইউক্রেনপন্থি গোষ্ঠীর জড়িত থাকার ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের

গত বছরের সেপ্টেম্বরে  বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে যাওয়া নর্ড স্ট্রিম-১ ও নর্ড স্ট্রিম-২ পাইপলাইনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

আলোচিত নর্ড স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনে হামলায় ইউক্রেনপন্থি কোনো গোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। নতুন গোয়েন্দা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মার্কিন কর্মকতারা এমন ধারণা করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমস মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ কথা জানায়।

আল-জাজিরা জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে যাওয়া নর্ড স্ট্রিম-১ ও নর্ড স্ট্রিম-২ পাইপলাইনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ২৬ সেপ্টেম্বরের এই হামলার ঘটনাগুলো সুইডেন ও ডেনমার্কের অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে ঘটে। পাইপলাইন বিস্ফোরণে গ্যাস বাল্টিক সাগরে ছড়িয়ে পড়ে। সুইডেন ও ডেনমার্ক তদন্ত চালিয়ে গ্যাস পাইপ লাইনের হামলা ইচ্ছাকৃত বলে সম্পর্কে নিশ্চিত হলেও দুষ্কৃতকারীদের পরিচয় জানতে পারেনি। গ্যাস পাইপ লাইনে বিস্ফোরণকে নাশকতা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। অন্যদিকে রাশিয়া পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে এর অভিযোগ তোলে। তবে কোনো পক্ষই নিজেদের দাবির পক্ষে প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। গত মাসে ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইডেন জানায়, তাদের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মঙ্গলবার বলেছে, তারা ওই তদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছে।

বিবিসি জানায়, সেপ্টেম্বরের বিস্ফোরণের আগেই রাশিয়া এসব পাইপলাইন দিয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। গত আগস্টেই রক্ষণাবেক্ষণের কথা বলে নর্ড স্ট্রিম-১ বন্ধ করে দেয় রাশিয়া। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের ডামাডোলে নর্ড স্ট্রিম-২ দিয়ে গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রম চালুই হয়নি।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, গোয়েন্দা সংস্থার নতুন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তারা মনে করছেন যে, সম্ভবত ইউক্রেনপন্থি কোনো গোষ্ঠী দুই পাইপলাইনের ওপর সমন্বিত হামলা চালিয়েছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার সেই ঘটনায় জড়িত- এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা, ইউক্রেনপন্থি গোষ্ঠীটিতে ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান নাগরিকরা থাকতে পারেন। এই রুশ নাগরিকরা রাশিয়ার সরকারবিরোধী হতে পারেন। নাশকতাকারীদের মধ্যে মার্কিন বা ব্রিটিশ নাগরিকরা নেই।

এদিকে ইউক্রেন গ্যাস পাইপ লাইনে হামলায় জড়িত নয় বলে দাবি করেছে জেলেনস্কি সরকার। প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াক বলেছেন, ইউক্রেন একেবারেই এ ঘটনায় জড়িত নয়। অন্যদিকে রাশিয়া নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটিকে ‘সমন্বিত ভুয়া সংবাদ প্রচারণা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে তদন্ত ছাড়াই অনুমানের ওপর ভিত্তি করে এমন একটি বিষয়ে কথা বলতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্রেমলিন। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা রিয়া-নভোস্তিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, তিনি মনে করছেন প্রকৃত হামলাকারীরা সবার দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নিতে এমন কাহিনি রচনা করছে।