আপডেট : ৯ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৩৮
স্বামীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর

স্বামীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

লক্ষ্মীপুরে একটি ইটভাটায় স্বামীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন ও তার স্ত্রীকে ৯ জন মিলে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ধর্ষণের শিকার ওই নারীর ডান হাতে সিগারেট দিয়ে ছ্যাকাও দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

ওই নারীর অভিযোগ, গত মঙ্গলবার রাতে তাকে ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনকারীদের ভয়ে এবং এলাকায় নতুন হওয়ায় তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি কাউকে জানাতে পারেননি। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে অভিযোগ করেন তিনি। বিকেলে সদর মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিনকেও তিনি ঘটনাটি জানিয়েছেন।

এদিকে ৯৯৯-এ কল পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চররমনী গ্রামের ওই ইটভাটায় অভিযানে গেছে। তবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ ঘটনায় অভিযুক্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

ধর্ষণের স্বীকার ওই নারীর বাড়ি বাগেরহাট জেলায়। তার স্বামী ভোলা জেলার বাসিন্দা। এই দম্পতির সংসারে আড়াই বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। মাস তিনেক আগে তারা ইটভাটাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে লক্ষ্মীপুরের উত্তর চররমনী গ্রামে আসেন। ইটভাটার পাশেই একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছেন।

ওই নারী জানান, তার স্বামী চট্টগ্রামে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। সেখানকার পরিচিত একজনের সঙ্গে তিন মাস আগে লক্ষ্মীপুরে আসেন ইটভাটায় কাজ করতে। তিন দিন আগে ওই লোক পালিয়ে যান। মঙ্গলবার তার স্বামী ইটভাটায় গেলে জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি ও দিনাজ তার কাছে ওই লোকের সন্ধান চান। সন্ধান না দিতে পারলে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন তারা। স্বামীকে খুঁজকে স্ত্রী ইটভাটায় গেলে ভাটা কর্তৃপক্ষ জানায়, তার স্বামীর কাছে টাকা পাওনা রয়েছে। টাকা না দিতে পারলে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে হবে তাকে। এ সময় তিনি বাসায় চলে যান। পরে গভীর রাতে জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি ও দিনাজ তার ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর তিনজন করে আরও ছয়জন তাকে ধর্ষণ করেন।

ওই নারী বলেন, আমরা অগ্রিম কোনো টাকা নিইনি। তবু তারা আমার স্বামীকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেছে। আমি ছাড়াতে গেলে পরে তারা আমার ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করেছে। নিরুপায় হয়ে ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশকে জানিয়েছি, স্থানীয়দের সহযোগিতা চেয়েছি। তারা ঘটনাস্থল পৌঁছে আমার স্বামীকে বাঁধা অবস্থায় পেয়েছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত জামাল মাঝি, নিজাম মাঝি বা দিনাজ এবং ইটভাটা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা এলে বিস্তারিত জানা যাবে।