টি-টোয়েন্টিতে চার-ছক্কার খেলা– মিরপুর বা শারজার মতো উইকেটে সেটা প্রায়ই সত্য মনে না হলেও পিএসএল আক্ষরিক অর্থেই তা মানে। বিশেষ করে রাওয়ালপিন্ডির উইকেটে রানের স্রোত বইছে রীতিমতো।
অবশ্য উইকেট না বলে একে মহাসড়ক বলাই ভালো, কারণ বোলারদের বিন্দুমাত্র সহযোগিতা করছে না এই ভেন্যু। গত ডিসেম্বরে এখানেই টেস্টের প্রথম দিনে ৭৫ ওভারে ৫০৬ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসেও ওভারপ্রতি ৭.৩৬ রান তুলেছিল সফরকারীরা। টি-টোয়েন্টিতে রানবন্যা হবে, এ আর বিস্ময়ের কী।
গতকাল ৮ উইকেটে ২৫৩ রান করেও হেরেছে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরস। কারণ, প্রথমে ব্যাট করে মুলতান সুলতানস ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ২৬২ রান। ফলে টি-টোয়েন্টিতে পরে ব্যাট করতে নেমে সর্বোচ্চ রান এবং সবচেয়ে বেশি রান করে হারের রেকর্ড– দুটি এখন কোয়েটার।
অবশ্য রাওয়ালপিন্ডিতে গত কয়েকদিন ধরেই এমন রানবন্যা দেখা যাচ্ছে। গত ১ মার্চ পিএসএলের রাওয়ালপিন্ডি পর্ব শুরু। প্রথম ম্যাচে দুই শ রানের কাছাকাছি গিয়েও পারেনি পেশোয়ার জালমি। ৩ মার্চ দ্বিতীয় ম্যাচে ২০১ রান করেও হেরেছে করাচি কিংস। ৫ ও ৬ মার্চের ম্যাচে আবার সবকিছু স্বাভাবিক।
৭ মার্চ থেকে যা হচ্ছে তা রীতিমতো অভূতপূর্ব। প্রথম ম্যাচে পেশোয়ারের ২০৭ তাড়া করতে নেমে ৩৫ রানে লাহোর কালান্দার্সের হার ইঙ্গিত দেয়নি এর পর কী হতে যাচ্ছে। রাতের ম্যাচে ২০৫ রান করেছিল মুলতান। ইসলামাবাদ ইউনাইটেড সে রান ১ বল আগেই পার করে ফেলে।
পরদিন বাবর আজমের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি পেশোয়ারকে ২৪০ রান এনে দিয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যটাকে একদম মামুলি বানিয়ে দিয়েছেন জেসন রয়। তার ৬৩ বলে ১৪৫ রানের ইনিংসে ১০ বল আগেই ২৪০ তাড়া করে ফেলে কোয়েটা!
পরদিন ইসলামাবাদের বিপক্ষে ফখর জামানের সেঞ্চুরি লাহোরকে ২২৬ রান এনে দিয়েছিল। কালান্দার্সের দুর্দান্ত বোলিং ইউনিট প্রতিপক্ষকে ১০৭ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেটা ব্যতিক্রম কিছু বলেই মানতে হচ্ছে। পরশু বাবর আজমের পেশোয়ার ২৪২ রান তুলেছিল। কিন্তু এবার রাইলি রুশোর ৫১ বলে ১২১ রানের ইনিংস ৫ বল আগেই ম্যাচ জিতিয়ে দেয় মুলতানকে।
টানা দুই ম্যাচে ২৪০ বা এর বেশি করে হেরেছে পেশোয়ার। টি-টোয়েন্টিতে টানা দুই ম্যাচে দুই শ রান করেও হারের একমাত্র রেকর্ড সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিকটসের। ২০২১-২০২২ সুপার স্ম্যাশে টানা দুই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২১৭ ও ২২৭ রান করেও হেরেছিল নিউজিল্যান্ডের দলটি।
এরপর গতকাল তো এক ম্যাচে ৫১৫ রানই তুলতে দেখা গেল। টি-টোয়েন্টিতে ইতিহাসে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি।
সব মিলিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে ৬ ম্যাচে ১০টি ইনিংস ২০০ ছাড়িয়েছে। আর পুরো পিএসএলে এই ভেন্যুতে ২০ ইনিংসের ১২টিই ছাড়িয়েছে দুই শ।
গতকাল ৩৬ বলে সেঞ্চুরি করে পিএসএলের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন উসমান খান। আগের রেকর্ড? ৪১ বলের। সেটিও হয়েছে সর্বশেষ ম্যাচে। একই ভেন্যুতে পরশু সে রেকর্ড গড়েছিলেন মুলতানেরই রাইলি রুশো। পিএসএলের দ্রুততম চার সেঞ্চুরির তিনটিই রাওয়ালপিণ্ডিতে চারদিনের মধ্যে হয়ে গেল!
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা