ইউক্রেনে চারটি সোভিয়েত যুগের মিগ ফাইটার জেট পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে পোল্যান্ড। এর মধ্য দিয়ে রুশ আক্রমণে পোল্যান্ড হলো প্রথম ন্যাটোর সদস্যদেশ, যারা প্রথম ইউক্রেনে বিমান পাঠাচ্ছে। এদিকে পোল্যান্ডের পর স্লোভাকিয়াও ইউক্রেনে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা বলেছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বিমান পাঠানো হবে। ইউক্রেনকে তারা চারটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পোল্যান্ড হচ্ছে ন্যাটোর সদস্য। রাশিয়াকে প্রতিহত করার ক্ষেত্রে দেশটির এমন পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এসব যুদ্ধবিমান ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। যুদ্ধবিমানগুলো সাবেক জার্মান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক থেকে পেয়েছিল পোল্যান্ড।
দুদা বলেন, যুদ্ধবিমানগুলো এখনো পোলিশ আকাশ প্রতিরক্ষায় ব্যবহার করা হচ্ছে। সিদ্ধান্তটি উচ্চপর্যায় থেকে এসেছে বলেও জানান তিনি। রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকেই ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর কাছে যুদ্ধবিমান সরবরাহের অনুরোধ জানিয়ে আসছে কিয়েভ। পরিকল্পনা অনুযায়ী পোল্যান্ড ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করলে তা হবে ন্যাটো জোটভুক্ত কোনো দেশের এ ধরনের প্রথম পদক্ষেপ।
চেক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট পিটার পাভেলের সঙ্গে যৌথ এক সংবাদ সম্মেলনে দুদা আরও জানান, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলে বাকি যুদ্ধবিমানগুলো পাঠানো হবে। পরে আরও ১২টি যুদ্ধবিমান পাঠানোরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পোল্যান্ড। ন্যাটো জোটভুক্ত অন্য দেশগুলোও একই ধরনের পদক্ষেপ নেবে কি না, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানাননি প্রেসিডেন্ট দুদা।
এদিকে স্লোভাকিয়ার পক্ষ থেকেও শুক্রবার ইউক্রেনে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। স্লোভাকিয়ার প্রেসিডেন্ট এনডওয়ার্ড হেগার বলেছেন, ইউক্রেনে মানুষ মারা যাচ্ছে। তাই স্লোভাকিয়ার পক্ষে যতটুকু সাহায্য করা সম্ভব, সেটা তারা করবে বলে অঙ্গীকার করেন এডওয়ার্ড।
অন্যদিকে ন্যাটোর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইউক্রেনে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এ ছাড়া ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠানোর বিষয়ে কোনো ইতিবাচক ইশারা দেননি।
ক্রেমলিনের হুঁশিয়ারি
পোল্যান্ড ও স্লোভাকিয়ার ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান সরবরাহের সিদ্ধান্তের কড়া নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইউক্রেনের মিত্রদের পাঠানো যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে দেবে রাশিয়া।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো মস্কোর বিশেষ সামরিক অভিযানের ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। এমন পদক্ষেপ নিয়ে এসব দেশ শুধু ইউক্রেন ও তার জনগণের জন্য আরও দুর্ভোগই ডেকে আনছে। রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানে এসব যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হবে।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা