আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০২৩ ১৭:৪৪
বাজারে গেলে মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই: গণতন্ত্র মঞ্চ

বাজারে গেলে মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই: গণতন্ত্র মঞ্চ

রাজধানীর পল্টন মোড়ে শনিবার দুপুরে সমাবেশ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। ছবি: দৈনিক বাংলা

রমজান মাস আসার আগেই দ্রব্যমূল্যের বাজারে আগুন ধরে গেছে, দাম আরও বাড়বে উল্লেখ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলছেন, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। কারণ দাম বাড়ার সিন্ডিকেটের লোকজন সরকারের। বাজারে গেলে মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই।

রাজধানীর পল্টন মোড়ে শনিবার দুপুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে’ যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘রোজার আগে প্রতিদিন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ উদ্বিগ্ন। আমরা জানি রোজার মধ্যে দাম আরও বাড়বে। কিন্তু সরকার এই ব্যাপারে কোনো কর্ণপাত করবে না। তাদের কিছু করার ক্ষমতা নেই। যারা দাম নিয়ন্ত্রণ করে, সেই সিন্ডিকেটের ভূত আছে। এই সরকার নিজেই একটা সিন্ডিকেট। জনগণের পকেট কাটার জন্য নিজেদের বন্ধু-স্বজনদের দিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তাদের কাজ হচ্ছে জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে যাওয়া।’

রোজার পর নিজেদের অধিকার কড়ায়-গণ্ডায় বুঝে নিতে কঠিন লড়াই করার কথা জানিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘রোজায় কঠিন কর্মসূচি হয়তো আমরা দেবো না। কিন্তু আন্দোলনের বাতাসকে ধীরে-ধীরে আরও বাতাস দিতেই থাকবো। যাতে রোজার পরে আমাদের পাওনা আদায় করে নিতে পারি। সেই পরিকল্পনা আমরা করছি। এতে দেশি-বিদেশি যারা আছেন সবার সমর্থন চাই।’

‘বিরোধীরা বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়’-আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে নাগরিক ঐক্যের এই নেতা বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) বিরোধী দলে থাকতে বিদেশি কার-কার কাছে ধরনা দিয়েছে, তার বহু প্রমাণ দেয়া হয়েছে।’

সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ৷ দামের কারসাজির সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকার ও তার বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন জড়িত। বাজারে গেলে মনে হয়, সরকার আল্লাহর ওয়াস্তে বাজারকে ছেড়ে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের তিস্তা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার দুটি খাল কেটে আবারও পানি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেজন্য প্রয়োজনীয় অর্থও এরইমধ্যে বরাদ্দ করেছে তারা। এতদিন পার হয়ে গেল, আমাদের সরকার এতই নতজানু যে, এখন পর্যন্ত ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটা সাধারণ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।’

৬-৭টি বড় শিল্পগোষ্ঠী দেশের পুরো বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে দাবি করে গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর বলেন, ‘এই শিল্পগোষ্ঠীর সিন্ডিকেটের কারণেই বাজারে জিনিসপত্রের দামে ঊর্ধ্বগতি। সরকার এসব শিল্পগোষ্ঠীর কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা পায়।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।