আইনজীবী সমিতির নির্বাচনেও পুলিশকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করেছে, যা বড় লজ্জার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা বলেছেন, এ নির্বাচন নিয়ে আইনজীবীদের পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষেরও ব্যাপক আগ্রহ ছিল। কিন্তু দেশের অন্য সব নির্বাচনের মতো সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চরিত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। পুলিশ ব্যবহার করে নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করেছে, যা বড় লজ্জার বিষয়। সম্প্রতি ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনেও একই ধরনের প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছে।
রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি-সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের আইনজীবীরা এসব কথা বলেন। এ সময় আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের কিছু অতি উৎসাহী আইনজীবী ও পুলিশের নারকীয় তাণ্ডব আইনজীবী হিসেবে সমাজের কাছে আমাদের হেয় করেছে। এটা শুধু আইনজীবী সমাজকেই নয়, পুরো জাতির জন্যই কলঙ্কজনক।
এ ঘটনায় প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়েছেন উল্লেখ করে কাজল বলেন, প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া পুলিশের তাণ্ডবে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের আহত হওয়ার বিষয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে।
নতুন করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে ফের নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আইনজীবীরা বলেন, অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যকরী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক একটি নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়া আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর ন্যক্কারজনক পুলিশি হামলার নির্দেশদাতা আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ চাই।
গত ১৫ মার্চ সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোট শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আওয়ামী ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হট্টগোল ও পুলিশের হামলায় ওই দিন ভোট গ্রহণ করা হয়নি। পরে দ্বিতীয় দিন ১৬ মার্চ সকালেই ভোট গ্রহণ শুরু করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা। তবে ভোট গ্রহণে বিরত ছিল বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা নতুন করে ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়ে সেসময় বিক্ষোভ করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে সবকটি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা