কক্সবাজারের পেকুয়ায় কলেজছাত্রী রনি আকতারের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পেকুয়া সদরের চৌমুহনীতে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় রনি আকতারের মা অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়েকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মানববন্ধনে রনির মা খালেদা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ১৩ মার্চ সাতকানিয়ায় ডেকে নিয়ে যায় আমিনুর রহমান। বিয়ের কথা বললে পরদিন আমিনুরের মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনরা তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে। এ ঘটনায় সাতকানিয়া থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচণায় মামলা রুজু করে।’
খালেদা বেগম আরও বলেন, ‘আমার মেয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে আসামিরা। তাকে দাফনের আগে যারা গোসল করিয়েছে, তারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে আঁতকে উঠেছে। তার বুকের দুপাশ, ঘাড় ও দুই হাতে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, নিহত রনি আকতার পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ি এলাকার জাকের আহমদের মেয়ে। তিনি পেকুয়ার বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ১৩ মার্চ সকালে কলেজে যাওয়ার পথে রনিকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আমিনুর রহমান সাতকানিয়ার বারদোনা গ্রামে তার বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন ভোরে সাতকানিয়া থানা পুলিশ সেখান থেকে রনির লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ওইদিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে সাতজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়। মামলার আসামিরা হলেন— চট্টগ্রামের সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের বারদোনা এলাকার সাব্বির আহমদের ছেলে আমিনুর রহমান, তার ভগ্নিপতি মো. এনাম, ভাই মো. ফারুক, বোন হাছিনা আকতার ও নাছিমা আকতার এবং পেকুয়া সদরের শেখেরকিল্লাহ ঘোনার আবদুল হামিদ ও মো. কায়েস।
এদিকে মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদনে কীটনাশক পানে রনির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করে পুলিশ। এ বিষয়ে রনির মা খালেদা বেগম বলেন, নির্যাতনে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে হত্যাকারীরা, যেন আত্মহত্যা বলে চালানো যায়।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, রনিকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে যদি হত্যার আলামত আসে, অবশ্যই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে এবং সে ধারায় অভিযোগপত্র দেয়া হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পেকুয়া উপজেলা যুবলীগ নেতা আজমগীর, সাংবাদিক এফ এম সুমন, বারবাকিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তণ ছাত্র পরিষদের নেতা তারেক নাজেরী, টৈটং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল হোসেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তফা মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা মো. বাহাদুর ও নিহত কলেজছাত্রী রনি আকতারের বাবা জাকের আহমদ।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা