শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হলের ১০ তলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিউ) ভর্তি রয়েছেন।
ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা ধারণা করছেন, ক্লাসে উপস্থিতির হার কম, ‘ক্লাস টেস্ট’ পরীক্ষা না দিতে পারাসহ পারিবারিক চাপে হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকতে পারেন।
প্রত্যক্ষদর্শী হলের প্রহরী পাভেল ভূঁইয়া বলেন, ‘হঠাৎ করে বিকট শব্দ শুনতে পাই। গার্ড রুম থেকে বাইরে এসে দেখি এক ছাত্রী নিচে পড়ে আছে। লাফ দেয়ার সময় তিনি কাঁঠাল গাছের ওপর পড়েছিল, ডাল ভেঙে নিচে পড়েছে। যতটুকু দেখেছি, হাত ভেঙে হাড় বের হয়ে গেছে। তাকে দ্রুত শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
ছাত্রীর সহপাঠীরা জানান, ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হলেও অসুস্থতার কারণে ফাইনাল পরীক্ষায় নিয়মিত অংশ নিতে পারেননি। তিনি বর্তমানে পরবর্তী ব্যাচের (২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থীদের সাথে অধ্যয়ন করছেন। আগামী এপ্রিল মাসে লেভেল ৩, সেমিস্টার ২ এর ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল তার। তার সহপাঠীরা জানান, আহত শিক্ষার্থী হতাশায় ভুগছিলেন। তার বেশ কয়েকটি ‘ক্লাস টেস্ট’ পরীক্ষা বাকি ছিল। অসুস্থতার কারণে তিনি নিয়মিত ক্লাস করতে পারেনি। ফলে উপস্থিতির জন্য বরাদ্দ নম্বর নিয়েও জটিলতা ছিল।
তারা আরও জানান, সমস্যাগুলো নিয়ে শিক্ষকদের সাথে বিভিন্ন সময় যোগাযোগ করলেও শিক্ষকরা কোনো সহায়তা করেননি। বরং অনেক শিক্ষক পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দিয়ে ক্লাস করার কথা বলেছে।
এ বিষয়ে জানতে কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. নাজমুন নাহারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসাইন বলেন, ‘মেয়েটি ঢাকা মেডিকেলের আইসিউতে আছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাত, পা ভেঙে গেছে। প্রচুর রক্তপাত হয়েছে।’
আত্মহত্যা চেষ্টার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যতদূর শুনেছি, মেয়েটির ক্লাসে উপস্থিতির হার কম ছিল। পরীক্ষাও বাকি ছিল। এ নিয়ে হতাশায় ছিল।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা