রমজানে দেশে পণ্যের যথেষ্ট মজুদ থাকার পরেও যারা দাম বাড়াচ্ছে, তাদেরকে ‘গণবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে রমজান কিংবা কোনো উৎসব-পার্বণ আসলে আমাদের দেশের কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করার জন্য পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়।’

শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘রমজানকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমদানিনির্ভর পণ্য থেকে শুরু করে উৎপাদননির্ভর পণ্যসহ সমস্ত পণ্যের সরবরাহ যাতে ঠিক থাকে সে ব্যবস্থা করেছেন। ফলে খাদ্যপণ্যের মজুদ এখন শুধু যথেষ্টই নয় বরং প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। রমজানে দামবৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’

দেশে চাহিদার তুলনায় খাদ্য মজুদ বেশি আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের খাদ্যনীতিতে বলা আছে, দেশে যদি ১০ লাখ টন খাদ্যপণ্য মজুদ থাকে তাহলে সেটি নিরাপদ। কিন্তু বর্তমানে ২০ লাখ টনের চেয়ে বেশি খাদ্যশস্য চাল, গম এবং ভোগ্যপণ্যের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে, কোনো কোনো পণ্য রমজানের চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত মজুদ রয়েছে।’

অসাধু ব্যসায়ীদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পণ্য বেশি দামে যার বিক্রি করবে তারা আসলে গণবিরোধী কাজে লিপ্ত। এদের বিরুদ্ধে সরকার ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। প্রয়োজনে শাস্তির বিধান রাখা হবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা ইতোমধ্যে সক্রিয় হয়েছে। বাজার মনিটর করা হচ্ছে। এটি খুব শিগগরিই উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত করা হবে। এ ব্যাপারে জনগণকেও সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানাবো।’

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব প্রেক্ষাপটে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও আমাদের দেশে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর মত কখনো পণ্যের সংকট তৈরি হয়নি। যাতে কেউ এই ধরনের সংকট তৈরি করতে না পারে। অতিরিক্ত মুনাফা করতে যেন পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিতে না পারে, এ ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমও ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে বিএনপি রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘রমজানে ইফতার পার্টি হয়, সেখানে কথাবার্তা হয় এবং অন্যান্য কর্মসূচি হয়। বিএনপির কর্মসূচি দেখে মনে হচ্ছে তারা রমজানের পবিত্রতাও নষ্ট করতে চায়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অতীতে আমরা কখনই পবিত্র রমজান মাসে আন্দোলনের ঘোষণা দেখি নাই। কারণ সবাই রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকে। রমজানে ইফতার পার্টি হয়, সেখানে কথাবার্তা হয় এবং অন্যান্য কর্মসূচি হয়। বিএনপির কর্মসূচি দেখে মনে হচ্ছে তারা রমজানের পবিত্রতাও নষ্ট করতে চায়।’

বিএনপি বিশৃঙ্খলার পাঁয়তারা করছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি রমজানেও মানুষকে স্বস্তি দিতে চায় না। রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করতে চায় এবং একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা তারা করছে, যেটি অনভিপ্রেত।’