আপডেট : ১ এপ্রিল, ২০২৩ ২১:৪৫
চট্টগ্রামে এক ঘণ্টার বৃষ্টি ভোগাল ৩ ঘণ্টা
প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে এক ঘণ্টার বৃষ্টি ভোগাল ৩ ঘণ্টা

অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয় বিভিন্ন স্থানে। শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গীত-হামজারবাগ এলাকায়। ছবি: দৈনিক বাংলা

চট্টগ্রামে শনিবার সকালে হওয়া বৃষ্টির ব্যাপ্তি ছিল প্রায় ১ ঘণ্টা। এ সময় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩৬ মিলিমিটার। অল্প সময়ের এ বর্ষণে দিনের শুরুতে প্রায় তিন ঘণ্টা জলাবদ্ধতার ভোগান্তিতে পড়তে হয় নগরবাসীকে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৮ মিলিমিটার রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। এর মধ্যে সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত হওয়া বৃষ্টির পরিমাণ ৩৬ মিলিমিটার। সকালের এ বৃষ্টি থামার পর দেখা যায়, নগরীর ২ নম্বর গেট, চকবাজার, মুরাদপুর, হালিশহর, সঙ্গীত-হামজারবাগ ও বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় অল্প থেকে হাঁটু পরিমাণ পর্যন্ত পানি জমে আছে।

সকাল ১০টার দিকে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকা থেকে নিউ মার্কেট যাচ্ছিলেন আব্দুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এরপর চালকরা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেন। বৃষ্টির পর সড়কে গাড়ি খুবই কম থাকে। আর সেই সুযোগে যেসব গাড়ি চলাচল করে, সেগুলো বেশি ভাড়া আদায় করে। এতে জনসাধারণের ভোগান্তি বাড়ে। এখানে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকে কোনো গাড়ি পান না।

সড়কে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন বলেন, চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা চিরাচরিত এক সমস্যা। এই জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার একাধিক প্রকল্প চলমান থাকলেও আলোর মুখ দেখেনি কোনোটিই। ফলে হাজার হাজার কোটি টাকার এসব প্রকল্পের কোনো সুফলই পাচ্ছে না নগরবাসী।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সূত্রে জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে গত পাঁচ বছর ধরে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের কাজ করছে তিনটি সরকারি সংস্থা। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) হাতে রয়েছে। ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনর্খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামের এই প্রকল্পে এরই মধ্যে খরচ হয়েছে ২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। জলাবদ্ধতা নিরসনে আরেকটি বড় প্রকল্প ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ও সিডিএর হাতে। দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে এরই মধ্যে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৭০ কোটি টাকা। তারপরও বর্ষা মৌসুমে এর সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী।

এসব প্রকল্পের পুরোপুরি সুফল পেতে হলে নগরবাসীকে কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। তিনি বলেন, ‘এটা অনেক লম্বা স্টোরি। তবে যেটা বলা যায়, তা হলো প্রকল্পগুলোর পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে তবেই এর সুফল পাওয়া যাবে।’

নগরীর আমবাগান আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক বিজন কুমার বলেন, ‘এখন যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেটা সিজনাল। মৌসুমী বায়ু প্রবাহের কারণে এটা হচ্ছে। আট দিন আগে থেকেই এই বৃষ্টিপাত নিয়ে পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে।’