আপডেট : ৪ এপ্রিল, ২০২৩ ২০:১০
কী এমন উন্নয়ন হয়েছে যে আগুন নিভছে না— প্রশ্ন ফখরুলের
প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও

কী এমন উন্নয়ন হয়েছে যে আগুন নিভছে না— প্রশ্ন ফখরুলের

মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। ছবি: দৈনিক বাাংলা

রাজধানীর বঙ্গবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডেও সরকারের ব্যর্থতা দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কী এমন উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে যে আগুন নেভানোর একটি বিভাগ পর্যন্ত নেই! ফায়ার সার্ভিসের ৪০টি ইউনিট কাজ করেও আগুন নিভছে না। বঙ্গবাজারে সব পুড়ে ধূলিস্মাৎ হয়ে গেছে।’

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঠাকুরগাঁও পৌর কমিউনিটি হলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। পরে ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সামনে রেখে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন তিনি।

এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীতে মাঝে মাঝেই অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। কয়েক দিন আগেই সিদ্দিক বাজারে আগুন লেগেছিল। এ ঘটনাগুলো কেন ঘটছে? কারণ সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে, যারা দেখবে যে আগুন যেন না লাগে কিংবা এর পরিপ্রেক্ষিতে কী করা যায়, বা আগুন লাগলে দ্রুত আগুন নেভানোর ব্যবস্থা আছে কি না— সেই প্রতিষ্ঠানগুলো কাজই করছে না। তাহলে কী এমন উন্নয়ন হয়েছে যে আগুন নেভানোর মতো একটি বিভাগ নেই?

মির্জা ফখরুল বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ৪০টি ইউনিট গিয়েও যদি আগুন নেভাতে না পারে, তাহলে বুঝতে হবে যে তাদের সেই সক্ষমতা নেই (দে আর নট টোটালি ইকুইপড দেয়ার)। কাজেই এ সরকারের সময় হয়ে গেছে চলে যাওয়ার। আমাদের বাংলাদেশকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে দেয়া উচিত।

সম্প্রতি সরকার দলীয় আইনজীবীরা পুলিশের সহায়তায় বেআইনিভাবে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন নির্বাচন পণ্ড করেছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, তারা নীতি বহির্ভূতভাবে সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে ঢুকে সেখানে আক্রমণ চালিয়েছে। দেশে এখন আইনের শাসন পুরোপুরি অনুপস্থিত। বার সমিতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, এই আওয়ামী লীগ সরকার সেটিকেও দখল করতে বেআইনিভাবে সব শক্তি প্রয়োগ করেছে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকেও তারা ব্যবহার করতে দ্বিধাবোধ করছে না।

নওগাঁর জেসমিন ও প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মানুষের ব্যক্তি অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। বলেন, দেশে গণতন্ত্র সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত। ব্যক্তিগত অধিকার ও মানবাধিকার পুরোপুরিভাবে হরণ করা হয়েছে। এখানে প্রতিনিয়ত সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব মন্তব্য করেন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও। বলেন, সরকার নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ঠিক ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতোই তামাশা শুরু করেছে। কিন্তু কোনো তামাশার নির্বাচনে বিএনপি বিশ্বাস করে না। জনগণ ভোট দিয়ে মতামত প্রকাশ করতে পারবে, এমন নির্বাচনে আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারে থাকাকালীন এমন নির্বাচন কখনো হবে না। তাই আমাদের ১০ দফা দাবির প্রথম দাবিই হলো— বর্তমান সরকারপ্রধান, যিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি, তাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং তার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে ক্ষমতা দিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিতে হবে।

এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমানসহ বিএনপির অন্যান্য নেতা ও বিএনপিসমর্থিত আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।