ঝিনাইদহে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প। এখান থেকে পানি না পেয়ে আওতাধীন কৃষিজমির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। চাষিরা ডিজেলচালিত সেচপাম্প বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করলেও তাতে বেড়েছে উৎপাদন খরচ।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬২ সাল থেকে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরার ১৩টি উপজেলার প্রায় ৯৫ হাজার হেক্টর জমিতে স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা দিয়ে আসছে দেশের বৃহত্তম জিকে সেচ প্রকল্প। এর আওতায় ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু, সদর ও শৈলকুপা উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ ৩৩ হাজার ৮৯৯ হেক্টর। গত বছর সেচ লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার হেক্টর হলেও এবার তার পরিমাণ শূন্য।
কৃষকরা জানান, এ বছর সেচ প্রকল্পের পানি না পেয়ে ফসল উৎপাদনে বৃষ্টি আর ডিজেলচালিত সেচপাম্পের পানি ব্যবহার করছেন তারা। এ কারণে তাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সাতব্রিজ এলাকার কৃষক রাজিবুল হক বলেন, গত বছর ক্যানেলে (খালে) পানি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার পানি পাচ্ছেন না। পানির অভাবে ধানের উৎপাদন ভালো হয়নি। কিছুদিন পর পাটেও পানি দিতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পানি দেয়া হলো না।
একই এলাকার কৃষক মাহিন হোসেন বলেন, জিকে ক্যানেলে আগে ভালো সেবা দিত। প্রথম দিকে খালগুলোতে প্রায় সব সময় পানি থাকত। এখন আর পানি ঠিক মতো দেয় না। খালগুলো সংস্কার করা হলে আবারও পানি ঠিকমতো পাওয়া যাবে।
শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান জানান, এ বছর ভেড়ামারায় তিনটি পাম্পের মধ্যে দুটিই বন্ধ। এ ছাড়া সেচ প্রকল্পের খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। ব্রিজের রেগুলেটরগুলো বিকল হয়ে গেছে। আর পাড় দখল করে দোকানপাট হয়েছে। এ কারণে আগের মতো জিকে সেচ খালে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
কৃষক আব্দুর রহমান আরও বলেন, জিকে সেচ প্রকল্পের আগের অবস্থা ফেরাতে খালগুলো সংস্কার, ব্রিজ নির্মাণ, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা দরকার। তাহলে এ এলাকার কৃষকের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কম খরচে কৃষক ফসল উৎপাদন করতে পারবে।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপপ্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব বলেন, দীর্ঘদিন পার হওয়ায় জিকে সেচ প্রকল্প আগের মতো সেবা দিতে পারছে না। সেচ প্রকল্পটি আগের অবস্থায় ফেরাতে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) প্রণয়নের কাজ চলছে। ডিপিপি পাস হলেই কাজ শুরু হবে। তখন আগের মতো সেবা দেয়া সম্ভব হবে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা