মারা গেছেন আইসিসির এলিট প্যানেলের সাবেক আম্পায়ার আসাদ রউফ। বুধবার রাতে লাহোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোকগমন করেছেন তিনি। মৃত্যুকালে পাকিস্তানি এই আম্পায়ারের বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনে পাকিস্তানি আম্পায়ারদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে যে আম্পায়াররা ভূমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম রউফ। ২০০০ সালে পাকিস্তান- শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অফিসিয়াল হিসেবে তার পথচলা শুরু। আইসিসির ওয়ানডে আম্পায়ার প্যানেলে তার অন্তর্ভুক্তি ২০০৪ সালে। পরের বছরই প্রথম সাদা পোশাকের ক্রিকেটেও আম্পায়ার হিসেবে অভিষেক তার। আরও এক বছর পর তার ক্যারিয়ার এসে পড়ে নতুন বাঁকে-অন্তুর্ভুক্ত হন আইসিসির আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলে।
২০১৩ পর্যন্ত এই এলিট প্যানেলের সদস্য ছিলেন রউফ। আম্পায়ার হিসেবে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৬৪ টেস্ট (৪৯ ম্যাচে অনফিল্ড এবং ১৫ ম্যাচে টিভি আম্পায়ার), ১৩৯ ওয়ানডে এবং ২৮টি কুড়ি ওভারের ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে ২০১৩ সালে রউফের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে কলঙ্কের দাগ লাগে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ম্যাচ গড়াপেটার কাণ্ডে উঠে আসে তার নাম। ম্যাচ গড়াপেটা নিয়ে মুম্বাই পুলিশের তদন্তে অভিযুক্ত হন। যে অভিযোগে থমকে যায় রউফের ক্যারিয়ার।
সে বছরই আইসিসির এলিট প্যানেল থেকে বাদ পড়ে রউফের নাম। যদিও ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে কারণে এমনটা হয়নি বলে দাবি করে আইসিসি। রউফ তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিট আকসুকে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
২০১৬ সালে ভারতীয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিসিআই দুর্নীতি এবং অসদাচরণের চারটি অভিযোগ এনে রউফকে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ করে। এরপর আর আম্পায়ার হিসেবে ক্রিকেট মাঠে ফেরা হয়নি তার।
ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন রউফ। সম্প্রতি লাহোরের লান্ডা বাজারে তার পুরনো জামা-জুতা বিক্রির দোকানের জন্য খবরের শিরোনামও হয়েছিলেন। একসময়ের প্রভাবশালী এই এলিট আম্পায়ারকে দোকানি রূপে দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন সবাই।
রউফের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চেয়ারম্যান রমিজ রাজা। এক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘আসাদ রউফের মৃত্যুর সংবাদ শুনে দুঃখ পেয়েছি। সে শুধু ভালো আম্পায়ারই নয়, তার দারুণ রসবোধও ছিল। সে সবসময় আমার মুখে হাসি এনে দিত এবং যখনই তার কথা মনে হবে আমার মুখে হাসি চলে আসবে। তার পরিবারের জন্য রইল সমবেদনা।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা