বছর তিনেক ধরেই কোর্টে প্রতিপক্ষের চেয়েও চোটের সঙ্গেই বেশি লড়াই চলছিল তার। সর্বশেষবার তাকে কোর্টে দেখাই গেছে গত বছরের জুলাইয়ে, ২০২১ উইম্বলডনে। না খেলতে খেলতে এমনই অবস্থা হয়েছে যে, ২০২১ উইম্বলডনের ঠিক এক বছর পর গত ১১ জুলাই ছেলেদের এককে এটিপি র্যাঙ্কিংয়ের বাইরেই চলে গিয়েছিলেন – তার ক্যারিয়ারে প্রথমবার!
শেষবারও।
আর যে র্যাঙ্কিংয়ের লড়াইয়েই থাকছেন না রজার ফেদেরার!
চোটের সঙ্গে লড়াইয়ে ক্লান্ত ৪১ বছর বয়সী ফেদেরার আজ আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়ে দিয়েছেন, পেশাদার টেনিস আর নয়। আগামী সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠেয় লেভার কাপই তাঁর সর্বশেষ এটিপি টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন ২০টি গ্র্যান্ডস্লামজয়ী সুইস কিংবদন্তি।
বিদায়ের ঘোষণায় গত তিন বছরে চোটের সঙ্গে অবিরাম লড়াইকেই কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন ফেদেরার, ‘অনেকেই জানেন, গত তিন বছরে চোট আর সার্জারিই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার জন্য। পুরো ফিট হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক টুর্নামেন্টে ফিরতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেছি। কিন্তু নিজের শরীরের ক্ষমতা-দুর্বলতার কথাও তো জানি, শরীরটা আমাকে গত কিছুদিনে পরিষ্কার বার্তা দিয়ে আসছিল।’
কোর্টে প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে লড়াইয়ে উদ্যম নিয়ে ফিরে আসা যায়, কিন্তু ৪১ বছর বয়সী শরীর বেঁকে বসলে আর সে লড়াইয়ে জেতা যায় কীভাবে! লড়াইয়ে ক্ষান্তি দিয়ে ফেদেরার তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ঘরে ফেরার বেলা এল!
‘আমার বয়স ৪১, গত ২৪ বছরেরও বেশি সময়ে ১৫০০-রও বেশি ম্যাচ খেলেছি। যতটা স্বপ্নেও ভাবিনি, তার চেয়েও বেশি স্নেহ টেনিস আমার জন্য রেখেছে সব সময়। এখন আমার মেনে নেওয়ার সময় এসেছে যে আমার প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে এসেছে’ – ফেদেরারের বিদায় ঘোষণা।
২০টি গ্র্যান্ড স্লাম, টানা সবচেয়ে দীর্ঘ সময় র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা...সব অর্জন সঙ্গী করেই সগর্ব বিদায় তার। এ তো রেকর্ডের বইয়ের পাতার খবর, দর্শকমনের খবর কে বলবে! ধ্রুপদী টেনিসে মন রাঙিয়ে যে শিরোপামঞ্চেও আলো ছড়ানো যায় – ফেদেরারের মতো করে সেটি আর কে দেখাতে পেরেছেন!
এই তো আর একটি সপ্তাহ, লেভার কাপ শেষে সেসব শুধুই হয়ে থাকবে স্মৃতি।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা