প্রচণ্ড গরমে ছোট-বড় সবার শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই পানি খেতে হবে। শুধুই পানি না খেতে চাইলে শিশুদের শরবত, আনারস খাওয়াতে হবে। শরবত হতে হবে ঘরে তৈরি।
অনেকেই এ সময়ে সন্তানকে স্যালাইন খাওয়ান। কিন্তু ডায়রিয়া ছাড়া শিশুদের স্যালাইন খাওয়ানো ঠিক নয়। এ সময় শিশুদের পানিবাহিত রোগ যেমন টাইফয়েড, জন্ডিস, জলবসন্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বাইরের খাবার একেবারেই খাওয়ানো যাবে না।
জন্ডিস বা টাইফয়েড হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর ডায়রিয়া হলে স্যালাইন বানানোর সময় বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। অনেকেরেই ভ্রান্ত ধারণা, ছোটদের স্যালাইন বড়দের মতো একই মাপের হবে না। এটা ভুল। অনেকে আবার অল্প পানিতে অল্প স্যালাইন গুলে খাওয়ান। কিন্তু এতে সোডিয়াম-পটাশিয়াম ইমব্যালেন্স হয়। এতে অনেক সময়ই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাজেই এই ভুল করা যাবে না।
আবার অনেক মা-বাবা মনে করেন, ছয় মাসের কম বয়সীদের স্যালাইন দেয়া যাবে না। এটাও ভুল। ছয় মাসের কম বয়সীদেরও ডায়রিয়া হলে স্যালাইন দেয়া যাবে। সবার ক্ষেত্রেই স্যালাইন বানানোর নিয়ম একই হলেও দুই বছর পর্যন্ত বয়সীদের ১০ থেকে ২০ চামচ, আর এর বেশি হলে ২০ থেকে ৪০ চামচ দিতে হবে।
আর এ সময়ে শিশুরা ঘামতে থাকে। ঘাম থেকে চুলকানির সমস্যা হয়। তাই শিশুদের শরীরে এ সময় তেল দেয়া যাবে না। তবে লোশন দেয়া যেতে পারে। যেসব শিশুর ঘামাচির সমস্যা রয়েছে, তাদের পাউডার দিতে হবে। তবে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, সেসব শিশুর ঠোঁটের চারপাশে পাউডার না ব্যবহার করাই ভালো।
এ সময়ে মশার উপদ্রব বাড়ে। মশা তাড়াতে কয়েল যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। তবে যদি কয়েল ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে যে কক্ষে কয়েল জ্বালানো হবে, সেখানে অন্তত আধা ঘণ্টা পর্যন্ত শিশুদের যাওয়া নিষেধ। একই পরামর্শ বিভিন্ন স্প্রে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও।
এ সময় হিট স্ট্রোকের পরিমাণ বেড়ে যায়। শিশুরাও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই শিশুরা যেন রোদে দৌড়াদৌড়ি না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনোভাবেই যেন শিশু ঘেমে না যায়। ঘেমে গেলে মাথা খুব ভালোভাবে মুছে নিতে হবে, যেন চুলের ভেতরে ভেজা না থাকে।
লেখক: শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, কনসালটেন্ট, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা