করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে যাত্রা শুরু করা আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের (এসএফআইএল) প্রশংসা করেছেন সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান পিনাকল টাওয়ার্সের চেয়ারম্যান প্যাট্রিক জোসেফ। ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে বুধবার এসএফআইএলের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রশংসা করেন।
‘স্বচ্ছতার বন্ধন’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর কার্যক্রম শুরু করে এসএফআইএল। মাত্র চার মাসেই লাভের মুখ দেখে প্রতিষ্ঠানটি।
দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে ওয়েস্টিনে আয়োজন করা হয় জমকালো অনুষ্ঠানের। এতে এসএফআইএলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি স্টেকহোল্ডাররাও অংশ নেন।
এসএফআইএলের ৯৮ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার প্রাতিষ্ঠানিক। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ কানাডা ও আমেরিকার সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) রয়েছে। আর বাকি ২ শতাংশ ব্যক্তিকেন্দ্রিক।
অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে ডিজিটাল অবকাঠামো প্রতিষ্ঠান পিনাকল টাওয়ার্সের চেয়ারম্যান প্যাট্রিক জোসেফ বলেন, ‘পিনাকল সিঙ্গাপুরভিত্তিক ডিজিটাল অবকাঠামো কোম্পানি। এটি মোবাইল ফোন টাওয়ার, ফাইবার, ডেটা সেন্টারের মতো ডিজিটাল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করে।’
নিজের ব্যাংকার পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে প্যাট্রিক বলেন, ‘আমি আসলে সাবেক ব্যাংকার… এখানে উপস্থিত বেশির ভাগই ব্যাংকার।’
স্ট্র্যাটেজিক হোল্ডিংস গ্রুপের সঙ্গে পরিচয়ের কথা উল্লেখ করে পিনাকল টাওয়ার্স চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রায় দুই বছর আগে প্রথমবারের মতো গ্রুপের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমার দেখা হয়। বাংলাদেশি বাজারে প্রবেশের প্রাক্কালে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল।
সঠিক স্থানীয় অংশীদার পাওয়া সব সময়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ। পিনাকলের ক্ষেত্রে বলব, আমরা খুবই বড় বেসরকারি ইক্যুইটি প্রতিষ্ঠান কেকেআরের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছি, যাদের ম্যানেজমেন্টের হাতে মোটা দাগে ৫০০ বিলিয়ন ডলার রয়েছে।’
বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে প্যাট্রিক বলেন, ‘এশিয়ায় বড় পরিসরে অবস্থান করা কেকেআরের বাংলাদেশে ওই অর্থে বিনিয়োগ ছিল না। এ কারণে আমাদের অনেক বিস্তৃত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
মার্কেটে প্রবেশের জন্য স্থানীয় অংশীদার দরকার ছিল। আমরা সফলভাবে লেনদেনে সক্ষম হয়েছিলাম, যার পেছনে মূলত ছিলেন স্ট্র্যাটেজিক হোল্ডিংসের মূল উদ্যোক্তা।’
কোম্পানির বিনিয়োগের বিষয়ে পিনাকল টাওয়ার্স চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ করেছি। ইনশাআল্লাহ আমাদের বিনিয়োগ আগামী কয়েক বছরে ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি) ডলার ছাড়াবে বলে আশা করছি।’
এসএফআইএলের উদ্যোক্তাদের প্রশংসা করে বিদেশি এ বিনিয়োগকারী বলেন, তার ব্যবসা পরিকল্পনাসংক্রান্ত বিস্তৃত কৌশলগত জ্ঞান ও চিন্তার গভীরতা রয়েছে। এটা পুরো গ্রুপের জন্য প্রাপ্তি।
‘আমি খুশি যে, আমরা এ থেকে উপকৃত হয়েছি’, বলেন প্যাট্রিক।
অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এসএফআইএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইরতেজা আহমেদ খান বলেন, ‘আমাদের নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) শূন্য। আমরা দেখেশুনে ফাইন্যান্স করছি। একটু বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছি। আমানতকারীরা টাকা ফেরত চাইলে যেন সঙ্গে সঙ্গে সেটা দিতে পারি, এটাই আমাদের পরিকল্পনা। আমানত সুরক্ষা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।’
এসএফআইএলের স্বতন্ত্র পরিচালক আরিফ খান বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের মুনাফাকে শুধু টাকার অঙ্কে বিবেচনা করলে হবে না। অর্থের চেয়ে আস্থা অর্জন করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জরুরি। সেটি করতে পারলে মুনাফা এমনিতেই আসতে থাকবে।
ওই সময় দুই বছরে এসএফআইএলের সাফল্যে বিস্ময় প্রকাশ করেন এ পরিচালক।
এসএফআইএল বাংলাদেশের একমাত্র জয়েন্ট ভেঞ্চার কনসোর্টিয়াম, যার রয়েছে কানাডা, আমেরিকা ও বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ।
দুই বছরে প্রতিষ্ঠানটির পোর্টফোলিও বেড়ে হয়েছে ৪৮২ কোটি টাকা। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগ করেছে ২১৬ কোটি টাকা।
২০২০ থেকে ২০২১ সালে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির নিট লাভ ২৭৩ শতাংশ। পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ২৭৫ শতাংশ।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা