কাতার, সৌদি আরব, কানাডা এবং কাফকো থেকে ২৪০ মেট্রিক টন ইউরিয়া ও এমওপি সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট খরচ হবে ৯৯৮ কোটি ৬৯ লাখ ৮৯ হাজার ৪৪৬ টাকা। মালয়েশিয়া থেকে ১৩৮ কোটি টাকা দিয়ে ২৫ হাজার টন চিনি এবং সুইজারল্যান্ড থেকে আরও দুই কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বুধবার সার, চিনি ও এলএনজি কেনার অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘২৯৪ কোটি ২ লাখ ৭৫ হাজার ২৬৫ টাকায় ৯০ হাজার টন ইউরিয়া সার এবং ৭০৪ কোটি ৬৭ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকায় ১ লাখ ৪০ হাজার টন এমওপি সার কেনা হবে।’
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতারের মুনজাত থেকে ১৪তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ৯৯ কোটি ১১ লাখ ৮ হাজার ৫০৩ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অন্য এক প্রস্তাবে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) বাংলাদেশের কাছ থেকে ১৫তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫০ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সৌদি আরবের সাবিক অ্যগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ২০তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ৯৫ কোটি ২৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭০৩ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব জানান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে প্রথম লটে ৫০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার ২৩৭ কোটি ৬৭ লাখ ৬১ হাজার ৬৯৫ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২য় লটে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন ৫০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার ২৩৭ কোটি ৬৭ লাখ ৬১ হাজার ৬৯৫ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অন্য এক প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপব এস এ থেকে ২য় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার ২৩৯ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৮০০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সুইজারল্যান্ড থেকে আরও দুই কার্গো এলএনজি: সুইজারল্যান্ড থেকে আরও দুই কার্গো বা ৬৭ লাখ ২০ হাজার এমএমবিটিইউ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে খরচ হবে এক হাজার ১২৬ কোটি ৪৩ লাখ ২২ হাজার ১০১ টাকা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডের টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫৬২ কোটি ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ২৬০ টাকা। এর আগে ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের এ প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৬২৪ কোটি ৪০ লাখ ২৪ হাজার ২৬ টাকা।
মালয়েশিয়া থেকে ২৫ হাজার টন চিনি কেনা হবে: মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা দিয়ে ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য এ চিনি কেনা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ চিনি কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট খরচ হবে ১৩৭ কোটি ৯৫ লাখ ৬৮ হাজার ১২৫ টাকা। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি মালয়েশিয়ার ব্রিজো মেরিন এসডিএন বিএইচডি (স্থানীয় এজেন্ট জেআই ট্রেডার্স, ঢাকা)-এর কাছ থেকে ৬৮ কোটি ৬৭ লাখ ৪৩ হাজার ১২৫ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি কেজি চিনির মূল্য পড়বে ৮৯ টাকা ৫০ পয়সা। আগে যা ছিল ৮৮ টাকা ৮৪ পয়সা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি মালয়েশিয়ার ব্রিজো মেরিন এসডিএন বিএইচডি (স্থানীয় এজেন্ট জেআই ট্রেডার্স, ঢাকা)-এর কাছ থেকে ৬৯ কোটি ২৮ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি কেজি চিনির মূল্য পড়বে ৮৮ টাকা ৭৪ পয়সা। যা আগে ছিল ৮৮ টাকা ৮৪ পয়সা।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা