আগামী সপ্তাহে দেশে তো বটেই, ভারতের মেঘালয়ে প্রায় ১১ দিন ধরে টানা ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস থেকে আগাম হাওরে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর সে কারণেই নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর চাষিদের বোরো ধান কেটে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
তীব্র গরমে জনজীবন অতীষ্ঠ। প্রতিদিনই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙছে। ঠিক এমন সময়েও হাওরে আগাম বন্যার এ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সে কারণেই আবহাওয়া বিভাগের বরাত দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তিন দিন ধরে মাইকিং করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ বলছে, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে টানা ১১ দিন ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। একই সময়ে দেশেও কালবৈশাখি ঝড় ও শিলা বৃষ্টিসহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ফলে এসব বৃষ্টির পানিতে খালিয়াজুরী উপজেলাসহ আশপাশের হাওরগুলোতে আগাম বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই হাওরপাড়ের জমির ধান ৮০ শতাংশ পাকলেই যেন দ্রুত কেটে ফেলা হয়।
উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্য বলছে, খালিয়াজুরীর হাওরে ১৮ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়েছে। ৫৫ শতাংশ জমির ধান এরই মধ্যে কাটা হয়েছে। ৩০ শতাংশ জমির ধান জমিতেই রয়েছে পাকা অবস্থায়। আর ১৫ শতাংশ জমির ধান রয়েছে কাঁচা।
খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সোমবার বিকেলে দৈনিক বাংলাকে বলেন, আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে কোনো জটিলতা বা অবহেলার কারণে জমির ধান কাটা না হলে আগাম বন্যায় এখানে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা আছে। ধান কাটা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনতে কৃষি বিভাগও তৎপর রয়েছে।
প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের এই মাইকিংয়ের উদ্যোগের প্রশংসা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। খালিয়াজুরী সদরের পিরানহাটি গ্রামের কৃষক মহসিন মিয়া বলেন, আমরা মাইকিং শুনে পাকা ধান কাটতে শুরু করেছি। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহে মধ্যে সব ধান কাটতে পারব। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই সময়মতো আগাম বার্তা দেয়ার জন্য। এই বার্তা না পেলে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ জমির ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা