এই সময়ে প্রচণ্ড গরমে প্রত্যেকের খাবার মেনে চলাটা জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট জীবনধারার পরিবর্তন অনুসরণ করতে হবে। গরমের কারণে আমরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি, যেমন: পানি স্বল্পতা, প্রস্রাবে সংক্রমণ, হিট স্ট্রোক, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, আমাশয়, গরমজনিত সর্দি-কাশি, জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও জন্ডিস। তাই গরমের দিনগুলোতে সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। আমাদের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখা, সেই সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যেসব খাবার এই সময়ে আমাদের জন্য উপকারী সেগুলো গ্রহণ করতে হবে প্রতিদিন নিয়ম করে।
যেহেতু এখন রোজা, সেহেতু আমাদের আরও বেশি সচেতনভাবে চলতে হবে। সাহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হবে এবং এই সময়ে আমাদের শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে গেলে শরীরের ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালান্স হয়ে যায়। তাই আমাদের খাবার নির্বাচন এমনভাবে করতে হবে যেন সারা দিন এনার্জি পাই এবং ইফতারের পরও আমরা সুস্থ থাকতে পারি। অনেক সময় অনিয়ন্ত্রিত খাবার ইফতারে খাওয়ার কারণে অসুবিধা দেখা দেয় শরীরে। এ ছাড়া পুষ্টির ঘাটতির কারণেও অনেক সমস্যা দেখা দেয়।
এই গরমে রোজা রেখে ইফতারে কী কী খাবেন
প্রথমত ইফতার হতে হবে সুষম অর্থাৎ খাবারে সব খাদ্যগুণ বিদ্যমান থাকা। আমরা সাধারণত ঘাম, শ্বাস, প্রস্রাব এবং মলের মাধ্যমে দিনে তিন থেকে আড়াই লিটার তরল হারাই। তাই নিয়মিত দিনে আমাদের প্রায় ছয় থেকে আট গ্লাস পানি বা অন্যান্য হাইড্রেটিং তরল পান করা উচিত। মজার ব্যাপার হলো- আমরা দুধ, চিনিমুক্ত পানীয়, চা এবং কফি, সেই সঙ্গে বিশ্বস্ত ট্যাপের জলের মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণ করতে পারি। তবে মনে রাখবেন, ক্যাফিনযুক্ত পানীয়গুলোর একটি মূত্রবর্ধক প্রভাব রয়েছে, যা আপনাকে তরল হারাতে বাধ্য করে। তাই এগুলো সর্বনিম্ন রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। ফলের রস এবং স্মুদিগুলোও অনেক উপকারী, তবে সেগুলো প্রতিদিন ১৫০ মিলি গ্লাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত, কারণ এতে চিনি রয়েছে।
আমাদের নির্দিষ্ট চাহিদাগুলো বয়স, আকার, লিঙ্গ এবং শারীরিক কার্যকলাপের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে, পাশাপাশি তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতাসহ পরিবেশগত কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে, যা আমাদের ত্বকের মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাওয়া জলকে ত্বরান্বিত করে।
যেহেতু গরমের কারণে ঘাম হয়ে শরীর থেকে অনেক অনুপুষ্টি বের হয়ে যায়, সেহেতু আমাদের খাবারটি সেই পুষ্টিগুণসম্পন্ন হতে হবে। এর মধ্যে রাখতে হবে তরমুজ, ডাবের পানি, সবজি স্যুপ, টক দইয়ের পানীয়, লেবুর শরবত ইত্যাদি। কারণ, এসব খাবারে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে এবং এসব খাবারে ইলেকট্রোলাইট থাকে, যা সারা দিন এ আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায় ঘামের মাধ্যমে সেগুলো পূরণ করতে সাহায্য করে।
লেখক: পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড, গুলশান।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা