আপডেট : ২০ এপ্রিল, ২০২৩ ২০:২০
গরম ও বাড়তি ভাড়ায় ভোগান্তিতে চট্টগ্রাম-সিলেটমুখীরা
প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

গরম ও বাড়তি ভাড়ায় ভোগান্তিতে চট্টগ্রাম-সিলেটমুখীরা

তীব্র গরমের মধ্যে গাড়ির জন্য অপেক্ষা ঘরমুখো মানুষের। ছবি: দৈনিক বাংলা

তীব্র গরমে হাসফাঁস অবস্থা। তার ওপর বাড়তি ভাড়া দিয়েও গাড়ির অপেক্ষায় বসে থেকে ভোগান্তি পড়ছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটের যাত্রীরা। ঈদযাত্রায় মহাসড়কে যানজট না থাকলেও দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না ঘরমুখো মানুষের। এ বছর মহাসড়ক দুটি দিয়ে প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ বাড়ি ফিরবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেটগামী বাস কাউন্টারগুলোতে দেখা গেছে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। ১৬টি জেলার মানুষ রওনা হচ্ছেন মহাসড়কের এ পথ ধরে। চট্টগ্রামমুখী লেনের নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, মোগরা পাড়া ও সিলেটের পথের তারাব, বরাব, ভূলতা ও গাউছিয়া এলাকায় বাস কাউন্টারগুলোতে অবস্থানরত যাত্রীরা গরমে হাসঁফাঁস অবস্থায় পড়তে দেখা গেছে। একটু ছায়ার আশায় আশ্রয় নিচ্ছেন সড়কের পাশের স্থাপনাগুলোতে। বাস কাউন্টারগুলোতে গাড়ির অপেক্ষায় বসে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নারীদের। এরমধ্যে আবার কাউন্টারের কর্মচারীরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শিমরাইল এলাকায় সিতাকুণ্ডুগামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাবেয়া সুলতানা বলেন, ‘রোজা রেখে এই গরমের মধ্যে রাস্তায় গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকা অনেক কষ্ট। আগে টিকেট কিনলেও গাড়ি আসেনি সময় মতো।’

চাঁদপুরের মতলবের যাত্রী আলাউদ্দিন বলেন, ‘গরমে ঘামে পুরো শরীর ভিজে গেছে। তাপদাহ এত বেশি যে ছোট বাচ্চাটা অসুস্থ হয়ে গেছে। তাদেরকে একটি দোকানের ভেতরে বসিয়ে রেখেছি। এখন অপেক্ষা বাস আসলে উঠব। যতক্ষই হোক বাড়ি তো যেতে হবে। সেখানে মা-বাবা আছেন সবাইকে নিয়েই তো ঈদ করতে হবে।’

সাইনবোর্ড এলাকায় বেসরকারি কর্মজীবী রায়হান কবির জানান, ‘নোয়াখালী যেতে আগে ভাড়া ছিল সাড়ে চার শ থেকে পাঁচ শ টাকা। তবে আজ সে টিকেট কিনতে হয়েছে ৬২০ টাকায়।’ টিকেট কিনেও গাড়ির জন্য পরিবার নিয়ে তাকে অপেক্ষা করতে দেখা যায় প্রায় দেড় ঘণ্টা।

চট্টগ্রামগামী যাত্রী নাফিসা মালিয়াত বলেন, ‘প্রতিটি টিকেটে ১০০ টাকা বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। এই গরমের মধ্যে বেশি টাকা দিয়ে টিকেট কিনেও গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বাস আসতে দেরির কারণ জানতে চাইলে কাউন্টারম্যান বলছে রাজধানীর সায়দাবাস থেকে বাস আসতে সময় লাগছে।’

পুলিশ বলছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২১ কিলোমিটার ও সিলেট মহাসড়কের ২৫ কিলোমিটারের নারায়ণগঞ্জের অংশের কোথাও যানজট নেই।

শিমরাইল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক শরফু উদ্দিন বলেন, ঈদযাত্রায় যাত্রী ভোগান্তি কমাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সাতটি ও সিলেট রুটের পাঁচটি স্থানে পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন ও কমিউনিটি পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুটি মহাসড়কের কোথাও যানজট নেই। বিকেলের পর সড়কে যাত্রীর চাপ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে যাতে করে কোথাও যানজট না হয়।’

বাড়তি ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে শরফুউদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ বক্সের কাছেই টিকেট কাউন্টার। যাত্রীরা অভিযোগ দিলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে মহাসড়কে যাত্রী হয়রানি বন্ধে মাঠে নেমেছে জেলা পুলিশ। চুরি, ছিনতাই ঠেকাতে টহল পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা কাজ করছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।