খারকিভ প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় শহর ইজিউমের বিশাল গণকবরে পাওয়া মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। রুশ সেনারা খারকিভ ত্যাগ করার পর ইউক্রেনীয় সেনারা সেখানে দখল নিলে পূর্বের পাইন বন থেকে প্রচণ্ড গন্ধ বের হতে থাকে। খবর পেয়ে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ মাটি খুঁড়ে সাড়ে চার শর মতো মরদেহ উদ্ধার করা শুরু করে। সেনা সদস্য ছাড়াও মৃতদের মধ্যে অনেক পুরুষ, নারী ও শিশু রয়েছে।
খারকিভের আঞ্চলিক প্রসিকিউটর ওলেক্সান্ডার ইলিয়েনকভ জানান, তারা বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকের গলায় দড়ি পেয়েছেন। তারা নিশ্চিত এই গণকবরের বেশির ভাগকেই নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। এখানে যুদ্ধাপরাধ ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেন। এই গণকবরের বেশির ভাগ কবরের ওপরই নম্বর দিয়ে রাখা হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি কবরের ওপর কাঠের ক্রুশ চিহ্নের ফলকে নাম লেখা ছিল।
এ বিষয়ে রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়াকে সরাসরি যুদ্ধাপরাধী বলে অভিযুক্ত করেন। এই গণকবর ছাড়াও রাশিয়া যেসব অঞ্চলে দখল নিয়েছিল, সেখানকার মানুষের ওপরই নির্যাতন চালিয়েছে বলে দাবি করেন জেলেনস্কি। এ ছাড়াও রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে সাত মাস অতিবাহিত হওয়ার পর, চলতি মাসে ইউক্রেনীয় বাহিনী দ্রুত বেশ কয়টি এলাকার দখল ফিরে পেলেও যুদ্ধ এখনই শেষ হচ্ছে না বলে মনে করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
মোদি-পুতিন বৈঠক
উজবেকিস্তানে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংগঠন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত শুক্রবারের মোদি-পুতিনের বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে আগ্রহ ছিল বিশ্ববাসীর। তবে শুরুতেই রাশিয়াকে যুদ্ধ থামানোর আরজি জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এর জবাবে পুতিন তাকে আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, রাশিয়াও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ শেষ করতে চায়।
তবে মোদিকে আশ্বস্ত করলেও এসসিও সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুতিন জানান, ইউক্রেনের পূর্ব ডনবাস অঞ্চলকে মুক্ত করা রাশিয়ার প্রধান সামরিক লক্ষ্য ছিল। তিনি এ বিষয়টি পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনও দেখছেন না এখনো। তিনি আরো বলেন, ‘এই যুদ্ধে তাড়াহুড়া করছে না রাশিয়া।’ রাশিয়ায় বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলার চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেন। আমরা এখন পর্যন্ত সংযমের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি, পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও গুরুতর হবে।’
পুতিনকে বাইডেনের হুঁশিয়ারি
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি অনুযায়ী ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা রুশ সেনা মুক্ত হয়েছে। আরো অনেক স্থানেই রাশিয়া পিছু হটছে বলে দাবি ইউক্রেনের। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত শুক্রবার বিবিসির একটি সাক্ষাৎকারে উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, “িনুযায়ী ছয় হাজার বর্গ ও,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পারমাণবিক বোমার ব্যবহার দেখার পর এই চিন্তা পরিবর্তন করা উচিত। তবে রাশিয়া যদি ইউক্রেনে পারমাণবিক বা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে ‘কঠোর পরিণাম’ ভোগ করবে।”
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা