চট্টগ্রামের খুলশীতে আমেনা নামে ১৪ বছরের এক গৃহকর্মীকে ধর্ষণের পর ৬তলা থেকে ফেলে হত্যা করে আরেক গৃহকর্মী। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুরুষ গৃহকর্মী সোহিদুল ইসলাম ফাহিমকে (২০) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গত ১৭ এপ্রিল এ ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি এতদিন চাপা ছিল। বুধবার ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি সামনে আসে।
নগরীর দক্ষিণ খুলশী এলাকার র্যাংকস এফসি নামে বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গৃহকর্তা সাইফুল ইসলাম গৃহকর্মী আমেনাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে ফাহিমের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
নিহত গৃহকর্মী আমেনা রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। গ্রেপ্তার ফাহিম কর্ণফুলী থানার চরপাথরঘাটা গ্রামের আলী আকবরের ছেলে। তারা দু’জনই কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছাবের আহমদের ছেলে সাইফুল ইসলামের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ খুলশীর ওই বাসায় স্ত্রী ও দুই বছরের মেয়েকে নিয়ে বাস করেন মাছ ব্যবসায়ী সাইফুল। ২ বছর ধরে ফাহিম তাদের বাসায় কাজ করছেন। এর মধ্যে গত ১৫ জানুয়ারি তার বাসায় কাজ শুরু করে আমেনা। গত ১৭ এপ্রিল ঘটনার দিন বাসার সবাই সেহরি খেয়ে ভোর ৫টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভবনের ইলেকট্রিশিয়ান মো. সামী ফোন করে তাকে (সাইফুল) জানান, দ্বিতীয় তলার সানশেডে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে আমেনা। আর পালিয়ে যাওয়ার সময় গৃহকর্মী ফাহিমকে আটক করেছে স্থানীয়রা। পরে আমেনাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আটকের পর ফাহিম স্থানীয়দের জানান আমেনাকে তিনি প্রথমে ধর্ষণ করেন। পরে আমেনা বিষয়টি পুলিশকে জানানোর কথা বললে ফাহিম তার গলা চেপে ধরে। এতে আমেনা জ্ঞান হারায়। পরে আমেনাকে বাসার ব্যালকনি দিয়ে নিচে ফেলে দেন ফাহিম।
তবে ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে ফাহিম ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, আমেনার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের কথা বলা নিয়ে ১৭ এপ্রিল সকালে দুজনের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে গলা চেপে ধরলে আমেনা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তাকে ব্যালকনি দিয়ে ছয়তলা থেকে ফেলে দেন।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ চাকমা গৃহকর্মীকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার তরুণ আদালতে ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে ধর্ষণের বিষয়টি জানা যাবে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা