আপডেট : ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ২১:১৬
নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ৯ বছর: মানববন্ধনে ক্ষোভ স্বজনদের
প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ৯ বছর: মানববন্ধনে ক্ষোভ স্বজনদের

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলা আপিল বিভাগে দ্রুত নিষ্পত্তি ও রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের স্বজনসহ আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের আদালত প্রাঙ্গণের বার ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। গত সাড়ে চার বছরেও মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় ক্ষোভ আর হতাশার কথা তুলে ধরেন মানববন্ধনে অংশ নেয়া ব্যক্তিরা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায়ের পর মামলাটি এখন আপিল বিভাগে। নৃশংস এ হত্যার ঘটনায় জড়িত নূর হোসেনসহ সব খুনিদের ফাঁসির রায় বহালসহ কার্যকর করতে হবে। উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগকে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির অনুরোধ জানান তারা।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া নিহত গাড়িচালক জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নুপুর আক্তার বলেন, ‘স্বামীকে হত্যার সময় তার সন্তান ছিল গর্ভে। সেই সন্তানের বয়স এখন ৮ বছর। কিন্তু স্বামী হত্যায় জড়িতদের এখনো শাস্তি হলো না। বিচার চেয়ে আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে কে জানে।’

নুপুর আক্তার তার জীবন সংগ্রামের কথা তুলে বলেন, ‘স্বামীহারা একজন নারীকে সংসার চালাতে কত কষ্ট করতে হয়, তা বোঝার ক্ষমতা অনেকের নেই। আমাদের এখনো একটাই দাবি দ্রুত রায় কার্যকর করা হোক।’

নিহত তাইজুল ইসলামের ভাই রিপন বলেন, মাত্র ৩৩ মাসে নিম্ন আদালত ও ১৯ মাসে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে খুনিদের ফাঁসি দিয়েছেন। তবে আপিল বিভাগে কবে মামলা শেষ হবে তা জানা নেই। এখনো বিশ্বাস করেন খুনিরা শাস্তি পাবে।

নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মামলার বাদী ও নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, সাত খুন মামলার রায় বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

মানববন্ধনে আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, নুর হোসেনসহ অন্য আসামিদের যদি শাস্তি কার্যকর না হয় তাহলে দেশে বিচার ও আইন প্রতিষ্ঠা হবে না। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হলে বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্তা বাড়বে।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন ফতুল্লা থানায়। ২০১৭ সালে ১৬ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদলত নুর হোসেন ও র‌্যাবের তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন। ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট হাইকার্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখেন। আর বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। এরপর মামলাটি আপিল বিভাগে গেলে গত সাড়ে ৪ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি।