পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে সরাসরি রাশিয়া থেকে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে এসেছে দেশটির জাহাজ এম ভি ‘আনকা সান’। বিভিন্ন ধরনের মেশিনারি পণ্য নিয়ে আসা জাহাজটি শনিবার দুপুর ১২টায় বন্দরের জেটিতে ভেড়ে। এর আগেও মোংলায় মেশিনারি পণ্য নিয়ে এসেছিল জাহাজটি।
বিদেশি এ জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কনভেয়ার শিপিং লাইন্সের খুলনার ম্যানেজার (অপারেশন) সাধন কুমার চক্রবর্তী জানান, গত ২ এপ্রিল রাশিয়ার নভোরোসিয়েস্ক বন্দর থেকে এক হাজার ৬২২.৯০৪ মেট্রিক টন মেশিনারি পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা হয় ‘আনকা সান’। শনিবার দুপুর ১২টায় রুশ পতাকাবাহী জাহাজটি মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে।
সাধন কুমার চক্রবর্তী জানান, দুপুর থেকেই জাহাজটি থেকে ৬৩০ প্যাকেজে আসা বিভিন্ন মেশিনারি পণ্য খালাসের কাজ শুরু হয়। খালাস শেষে এ পণ্য সড়কপথে নেয়া হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে।
ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়া যুদ্ধে জড়ানোয় সাম্প্রতিককালে সাতটি কোম্পানির ৬৯টি জাহাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ান কোনো জাহাজ সরাসরি মোংলা বন্দরে পণ্য নিয়ে আসতে পারছিল না। এ জন্যই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজগুলো রাশিয়া থেকে পণ্য নিয়ে ভারতের হলদিয়া বন্দরে খালাস করছে। পরে বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিট চুক্তির আওতায় সেখান থেকে ওই পণ্য আসছে মোংলা বন্দরে। আবার কোনো কোনো পণ্য হলদিয়া বন্দর থেকে সড়কপথেও আসছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ধরনের মালামালের কয়েকটি চালান ভারতে ট্রানজিট করে সেখান থেকে মোংলা বন্দরে এসেছে।
অবশ্য গত ২৫ এপ্রিল রূপপুরের মালামাল নিয়ে রাশিয়া থেকে সরাসরি মোংলা বন্দরে আসে দেশটির জাহাজ ‘ইয়ামাল অরলান’। তারও আগে এসেছিলো ‘ড্রাগনবল’ ও ‘কামিল্লা’। এছাড়া ‘আনকা সান’ এর আগেও আরেকবার এসেছে। গত বছরের অক্টোবরে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের এক হাজার ৫৮৯ দশমিক ৬৪৩ টন মেশিনারি পণ্য এসেছিল জাহাজটি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) কালা চাঁদ সিংহ বলেন, মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলেই দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর মালামাল ও আমদানিকৃত রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বেশিরভাগই এ বন্দর দিয়ে খালাস হচ্ছে। বন্দরের বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা ও সেবায় আকৃষ্ট হয়ে এ বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ দিনে দিনে বাড়ছে আমদানি-রপ্তানিকারকদের।
বন্দরের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের যথাসময়ে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে পারায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন করে এ বন্দরের সুনাম আরও বেশি ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা