ওকে>জামাল
যত দোষ নন্দ ঘোষ
আবীর আবদুল্লাহ
সব দোষ কেন একজনের ওপরেই চাপায় সবাই। এমনকি নিজের দোষ, বন্ধুর দোষ পরম নিশ্চিন্তে সেই লোকটার ওপর চাপিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। কী এমন দোষ করেছিলেন লোকটা যে, যুগ যুগ ধরে দোষের বোঝা তার বাড়তেই থাকবে? কে সেই নন্দ ঘোষ, কথায় কথা যাকে আমরা বলির পাঁঠা বানাই!
মামা কংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য বাবা বাসুদেব তার অষ্টম পুত্র শ্রীকৃষ্ণকে ঘোষপল্লীর আত্মীয় নন্দ ঘোষের বাড়িতে রেখে আসেন। সেখানেই পুত্রস্নেহে বড় হতে থাকে বলরাম এবং শ্রীকৃষ্ণ। নন্দ পত্নী যশোদাও পালিত দুই পুত্রকে স্নেহ করতেন।
বিষ্ণু পুরাণ কিংবা মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের বাল্যকালের গল্প তেমন নেই। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের ভক্তদের লেখা ভাগবতে শ্রীকৃষ্ণের মাখন চুরি এবং নানান দুষ্টুমির উল্লেখ আছে।
বাল্যকালে শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন চঞ্চল, দিনরাত ঘুরে বেড়াতেন বনে-বাদাড়ে। গ্রামের স্নানরত রমণীদের উত্ত্যক্ত করতেন। প্রাচীনকালের নানান গল্পে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাধিকার নাম। রাধিকা বা রাধা ছিলেন আয়ান ঘোষের স্ত্রী। তার সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের প্রেম নিয়ে প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে শোনা যায় মুখরোচক নানান গল্প।
গ্রামের সবাই শ্রীকৃষ্ণের এসব কাজকর্ম নিয়ে বিরক্ত ছিলেন। তারা বারবার নন্দ ঘোষের কাছে করতেন অভিযোগ। কিন্তু তেমন লাভ হতো না। পুত্রস্নেহে শ্রীকৃষ্ণকে কিছুই বলতেন না তিনি। তখন মানুষের যত ক্ষোভ গিয়ে পড়ত নন্দ ঘোষের ওপর। গাঁয়ের লোকেরা মনে করত নন্দ ঘোষই নষ্টের গোড়া, তার লাই পেয়ে কৃষ্ণ এমন বেয়াড়া হয়ে উঠেছে। সুতরাং ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’-এর।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা