গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ও বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
শুক্রবার দুপুরে নগরীর ছয়দানার বাসভবন প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ তোলেন। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুন এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জায়েদা খাতুনের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গত চার দিন ধরে টঙ্গীতে আজমত উল্লা খান তার নিজস্ব লোক দিয়ে আমাদের ওপর হামলা ও নির্বাচনের প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। তারা আমাকে ও আমার মাকে হত্যা করতে চেয়েছে। আমাদের ওপর অন্যায়ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে।’
জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, ‘নগরীর প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমাদের নেতা-কর্মীরা যখন প্রচার-প্রচারণা করে তখন প্রতিটি নেতা-কর্মীকে বিভিন্নভাবে কৌশলে বাধা দিচ্ছে। আজমত উল্লা তার নিজস্ব ও দলীয় কিছু সন্ত্রাসী লোক দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছেন।’
আওয়ামী লীগের এ বহিষ্কৃত নেতা আরও বলেন, ‘প্রশাসনের কিছু লোক আছেন যারা এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব পালন করেন। তারা আমার কর্মীদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে এবং মোবাইলে তাদের ভয় দেখাচ্ছেন। তারা বলছেন, জায়েদা খাতুন যেন টেবিলঘড়ি প্রতীকে ভোটটা না করতে পারেন। তারা আজমত উল্লা খানকে ভোট দেয়ার জন্য নির্দেশ দিচ্ছেন। নগরীর কোনো স্থানে পোস্টার লাগাতে দেয়া হচ্ছে না। আবার লাগালেও সেগুলো ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে।’
এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আপনারা যদি সুষ্ঠু ভোট করতে না পারেন তাহলে সব প্রার্থীদের ডেকে বলেন আমরা প্রার্থিতা ছেড়ে দেই। আপনারা ভোটকে অসম্মান করবেন না। জনগণ যাকে ভোট দেবে রায়টা যেন তার পক্ষেই যায়।’
কৌশলে গ্রেপ্তার করতে দুদকে ডেকেছে
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তলব প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি যেন মানুষের কাছে ভোট চাইতে না পারি, আমাদের লোকজন এখানে যেন ভোট চাইতে না পারে, তাই তারা কৌশলে আমাকে অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) করার জন্য এবং আমার সময় নষ্ট করার জন্য দুদকে ডেকেছে।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন আমাকে গত ১৫ তারিখ দুদক থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমি যেন ২১ ও ২২ তারিখে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত থাকি, গাজীপুর থেকে গিয়ে বসে থাকি। দুদক একটি সম্মানিত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান যেন ধ্বংস না হয়। আমার মায়ের নির্বাচন পরিচালনার প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে বলতে চাই, আমাকে যেন দুদক নির্বাচনের আগে হয়রানি না করে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু দুদক নয়, আপনারা যেকোনো জায়গায় যেকোনো প্রতিষ্ঠানে যেকোনো সময় আমাকে ডাকবেন, আমি জবাবদিহির জন্য প্রস্তুত আছি। কিন্তু আইনের নাম বলে বেআইনি কাজ যেন না করে। সারা দেশের মানুষ জানে, নির্বাচন কমিশন জানে, আমি আমার মায়ের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী। তাহলে আমাকে কেন ২১ এবং ২২ তারিখ ডাকা হলো? ২৩ তারিখে প্রচারণা বন্ধ। এটি করা হয়েছে আমি যেন মানুষের কাছে ভোট চাইতে না পারি। আমাদের লোকজন এখানে ভোট চাইতে না পারে।’
এ সময় জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের ওপর অন্যায়ভাবে হামলা করা হচ্ছে। আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সেজন্য ভোটারদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন স্বতন্ত্র এ মেয়র প্রার্থী।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা