যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ঘোষণায় বাংলাদেশ সরকার কোনো চাপে নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করতে সরকারের অঙ্গীকারকেই দেশটি সমর্থন দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তাতে প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। অতএব আমরা আমাদের যে অঙ্গীকার, সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন আমরা করতে চাই এটাকেই তারা সমর্থন দিয়েছেন। এতে চিন্তার কিছুই নেই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট আয়োজন করতে যত ধরনের আয়োজন করা প্রয়োজন, আমরা করব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যপারে বদ্ধপরিকর।’
মোমেন বলেন, ‘কেউ কেউ অভিযোগ করে যে রাতে অন্ধকারে নাকি ভোট হয়ে যায়, এজন্য স্বচ্ছ ব্যালটবক্স তৈরি করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র দেশে আছে বলেই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণতান্ত্রিকভাবে দেশ পরিচালনা করছেন বলেই, আমাদের দেশের মানুষের মঙ্গল হয়েছে, উন্নতি হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক সরকার, আমাদের জনগণের প্রতি বিশ্বাস আছে। সুতরাং এই যে কী তারা করেছে, শুনেছি সব দেশের জন্য, ভালো তো। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এটি বরং আমাদের অবস্থানকে আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছে। ফলে আমাদের যেটা ভালো, স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন আমরা করে যাব।’
নতুন মার্কিন ভিসানীতির ফলে বাড়তি চাপ অনুভব করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘না, বাড়তি কোনো চাপ নেই। তারা তাদের কাজ করেছেন, আমরা আমাদের কাজ করেছি।’
গত ৩ মে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশটির নতুন এই ভিসা নীতি সম্পর্কে বাংলাদেশকে অবহিত করা হলেও এতদিন সরকারের পক্ষ থেকে তা জানানো হয়নি কেন— জানতে চাওয়া হয়। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের নীতি তারা জানাক, আমি কেন জানাব। তাদেরকেই জানাতে দেন, তারা সেটি জানিয়েছেন।’
ড. মোমেন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে চিঠি দিয়েছেন, অপূর্ব চিঠি দিয়েছেন, বললে চিঠির ভাষ্যটা বুঝতে পারবেন, সেই চিঠিতে অত্যন্ত সুন্দর কথা বলেছেন। চিঠিতে এক জায়গায় বলেছেন, ‘এই নীতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়ক হবে। আর গণতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খুঁটি (নির্বাচন) যেকোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বাধাগ্রস্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র যাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারে’।”
সরকারের পক্ষ থেকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে, তারপরেও ভিসানীতি আরোপের বিষয়টি কেন আসছে, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুষ্ট লোকরা দেখেন না, জ্বালাও-পোড়াও করে। গতকালও পুলিশকে পিটিয়েছে, বাস জ্বালিয়ে দিয়েছে। অতএব তারা একটু সাবধান হবেন। এই ভিসানীতি শুধু যে সরকারি দল বা সরকারে যারা রয়েছে তাদের জন্য না বিরোধীপক্ষে যারা রয়েছেন তাদের ওপরও বর্তাবে।’
নতুন ভিসানীতির পর যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘খুবই ভাল সম্পর্ক রয়েছে, কোনো সম্পর্কের টানাপোড়েন নেই। ৫২ বছরে আমাদের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়েছে, তারা এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। যেটি তারা চিঠিতে লিখেছে।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা