আপডেট : ২৮ মে, ২০২৩ ২২:০০
পাঁচ জেলায় সড়ক ঝরল ৭ প্রাণ
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাঁচ জেলায় সড়ক ঝরল ৭ প্রাণ

ফাইল ছবি

তিন বন্ধুই এসএসসি পরীক্ষার্থী। রোববার পরীক্ষা ছিল এক বন্ধুর। বাকি দুজন মোটরসাইকেলে করে তাকে নিয়ে যায় কেন্দ্রে। পরীক্ষা শেষে তাকে নিয়ে রওনাও হয়। কিন্তু বাড়িতে আর ফেরা হয়নি। তাদের মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনার শিকার হলে তিন বন্ধুর দুজনেই পাড়ি জমিয়েছে না ফেরার দেশে। আরেক বন্ধু মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে হাসপাতালে।

রোববার দুপুর ২টার দিকে ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা সড়কে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বেলতলি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়াও দেশের আরও চার জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় আরও পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

ময়মনসিংহের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে জেলার তারাকান্দা উপজেলার বিসকা ইউনিয়নের নগুয়া গ্রামের আবু সাইদের ছেলে মো. শুভ ও নেত্রকোনা সদর উপজেলার বড় কাটুরি এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে মো. সুমিত।

নিহত দুজনের মধ্যে সুমিত কাশিগঞ্জ বাজার এলাকায় নানাবাড়িতে থেকে লেখাপড়া করত। তারা দুজনেই দুজনেই তারাকান্দার কাশিগঞ্জ ক্রিয়েশন মডেল স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে তাদের আরেক বন্ধু নাজমুল।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, রোববার তিন বন্ধুর মধ্যে নাজমুলের পরীক্ষা ছিল। তাকে মোটরসাইকেলে করে শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিয়ে যায় শুভ ও সুমিত। পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে বেলতলী এলাকায় একটি বাস তাদের মোটরসাইকেলটি চাপা দেয়। দুর্ঘটনাস্থলেই ‍মৃত্যু হয় শুভর। গুরুতর আহত অবস্থায় সুমিত ও নাজমুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে সুমিত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাজমুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দির শহীদনগরে যাত্রীবাহী মাইক্রোবাসকে পেছন থেকে একটি ট্রাক ধাক্কা দিলে দুজন নিহত হয়েছেন। নিহত দাউদকান্দির ভবানীপুর গ্রামের দুলাল বেপারী ও আবদুস সাত্তার ওই মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুর্ঘটনায় ট্রাক ও মাইক্রোবাস খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলেই একজন ও হাসপাতালে নেয়ার পথে আরেক জনের মৃত্যু হয়েছে। সামান্য আহত দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

এদিকে রোববার সকাল ৯টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের জিরণগাছা মোড়ে মাটি বহনকারী আলমসাধুর চাপায় বন্ধকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জীম হোসেন প্রাণ হারিয়েছে।

কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইবাদ হোসেন জানান, আলমসাধুটি জব্দ করা গেলেও চালক পালিয়ে গেছেন।

সকাল ১০টার দিকে আরেক দুর্ঘটনা ঘটে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌর এলাকার লক্ষ্মীপুর ব্রিজের কাছে। এ দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হন বাইসাইকেলচালক আলা উদ্দিন।

জীবননগর থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, সাইকেল ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আলা উদ্দিন তৎক্ষণাৎ প্রাণ হারান। মোটরসাইকেলের চালক রাজ্জাক হোসেনও আহত হয়েছেন, তাকে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে হবিগঞ্জের মাধবপুরে আন্দিউড়া হাইওয়ে ইন হোটেলের কাছে গতকাল বিকেল ৫টার দিকে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন এক দম্পতি। এর মধ্যে স্বামী আন্দিউড়া গ্রামের আব্দুল হামিদ দুর্ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন। তার স্ত্রী আন্দিউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হালিমা খাতুন দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন।

শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মাঈনুল ইসলাম ভুইয়া জানান, উপজেলা সদর থেকে মোটরসাইকেলে করে আন্দিউড়া গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন আব্দুল হামিদ-হালিমা খাতুন দম্পতি। পথে ঢাকাগামী ইউনিক পরিবহনের একটি বাস তাদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনাটি ঘটে।