আপডেট : ২৯ মে, ২০২৩ ২০:৪৫
আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স নয়, চুরির টাকা আসছে: ফখরুল

আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স নয়, চুরির টাকা আসছে: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সম্প্রতি রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) আসার প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স নয়, বরং চুরির টাকা দেশে আসছে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় ফখরুল এ কথা বলেন। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল (রোববার) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) একটি সেমিনার করেছে। সেখানে তারা বলেছে—এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতি যতটা খারাপ, তা আগে কখনো হয়নি। আর সরকার উন্নয়নের গলাবাজি করে, সবাই নাকি ভালো আছে। এখন হঠাৎ করে বলছে আমেরিকা থেকে নাকি রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে। এটা তো আমাদের কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা আমেরিকা যায়, তারা ঘর-বাড়ি সবকিছু বিক্রি করে যায়...? সাধারণ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের দেশে যায়। সেখান থেকে তারা রেমিট্যান্স নিয়ে আসে। এখন কী এক জাদু তৈরি হলো যে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স আসছে! বলেন তো কী?’

‘চোর, চোর। চোরেরা যে চুরি করে পাচার করেছে এখন সেগুলো ফেরত আনছে। কারণ কী জানেন? আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পাবে। সব দিক দিয়ে চুরি। চুরি, চুরি, চুরি’, বলেন ফখরুল।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কয়েকদিন আগে সরকার খুব লাফালাফি করেছিল। এখন কিন্তু থেমে গেছে। এখন বলে, আমরা সংঘাত চাই না। আলোচনায় বসতে চাই।’

বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার পরিবর্তন চায় দাবি করে মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। আমাদের দশ দফার আন্দোলনের প্রথম দফা হলো সরকারের পদত্যাগ। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবর্তন চাই, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই।’

ফখরুল নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, ‘মনে রাখতে হবে... তারা আমাদের ফাঁদে ফেলতে চাইবে। গাড়ি পুড়বে, তারা অগ্নিসংযোগ করবে, আর দায় দেবে আমাদের।’

জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তার মৃত্যুর সংবাদে সারা দেশ বাকরুদ্ধ ছিল। যে জিয়া মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করছেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে কোনো লাভ নেই।’

সভার প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে যারা ক্ষমতায় তারা জিয়াকে ভয় পায়। তাই তার সম্পর্কে অবান্তর কথা ছড়ানো হচ্ছে। আজকে তারা (সরকার) বলে, জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না। মিথ্যাচার করে নতুন প্রজন্মের কাছে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্ব কী চিন্তা করছে তা সবাই জানে। আমেরিকায় গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমেরিকার ভিসানীতি তো আগেই ছিল, তবে কেন বাংলাদেশের জন্য আলাদা ভিসানীতি করতে হলো? কারণ...দেশের গণতন্ত্র যে আজ ভূলুণ্ঠিত আজ সে সম্পর্কে বিশ্ব অবগত।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ও আব্দুস সালামসহ অনেকে।