সেলিনা হোসেন। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক। বর্তমানে বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৪৭ সালের ১৪ জুন রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। এ বছর পা রাখলেন ৭৬ বছরে। জন্মদিন উপলক্ষে তার সাহিত্যকর্ম ও জীবনকথা নিয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কথাসাহিত্যিক রণজিৎ সরকার
প্রশ্ন: জন্মদিন ও মানবজনম নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
সেলিনা হোসেন: জন্মদিন ও মানবজনম দুটো একইভাবে সত্য। জন্মদিন না হলে মানবজনম তো প্রত্যাশিত হয়ে সামনে থাকে না। সুতরাং সে জন্য জন্মদিন ও মানবজনম- সেটা বেঁচে থাকা সত্য, সেই সত্যকে ধারণ করে নিজের সবটুকু, যা কিছু আছে, সেটাকে সৃষ্টিশীলতার জায়গায় এবং মানবকল্যাণে নিজের জীবনটাকে বড় করে তোলা। এটাই মানবজনমের একটি বড় দিগন্ত।
প্রশ্ন: জন্মদিন নিয়ে আপনার মায়ের সঙ্গে কোনো স্মৃতি, যা এখনো মনে পড়ে?
সেলিনা হোসেন: আমার শৈশব কেটেছে বগুড়া জেলার গণ্ডগ্রামে। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে আমার বাবা চাকরিসূত্রে বগুড়ায় বদলি হয়েছিলেন। সেই সময় এক প্রাকৃতিক প্রাণপ্রাচুর্য ও সৌন্দর্যের মধ্যে আমার শৈশব কেটেছে। বসতি কম ছিল। প্রকৃতির সৌন্দর্য ছিল দিগন্ত-বিস্তৃত। মা খুবই সচেতন মানুষ ছিলেন। আমরা পাঁচ-ছয় ভাইবোন একসঙ্গে ছিলাম। বয়সে এক, দুই বছরের ছোট-বড় ছিলাম। আমাদের সবাইকে নিয়ে তিনি সংসারের বড় জায়গাটা আলোকিত করতেন। জন্মদিনে তার রান্নার সুগন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ত। আমাদের জন্মদিনকে বড় জায়গায় নিয়ে যেতেন। ভাইবোনদের যারই জন্মদিন হোক, সেদিন মা আমাদের ডেকে বলতেন, এসো আজ জন্মদিন, তোমাদের জন্য পোলাও-কোরমা রান্না হবে। আরও কিছু খাবে? আমরা কিছু বলতাম না। কেকের প্রসঙ্গ এলে বলতাম, কেক এখন কোথায় পাবেন। এটা তো একটা গ্রাম। এখানে তো কেক পাওয়া যাবে না। আপনার কোনো কষ্ট করার দরকার নেই। আপনি আমাদের জন্মদিনের কথা বলেছেন, স্মৃতির জন্য এটাই সবচেয়ে বড় অনুভবের জায়গা। আমরা খাওয়ার জন্য তেমন উৎফুল্ল থাকতাম না। আমাদের সবার জন্মদিন মা এভাবে আলোকিত করে রাখতেন।
প্রশ্ন: আপনার অমর সৃষ্টি ‘নীল ময়ূরের যৌবন’ ও ‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’ উপন্যাস কীভাবে লেখা হলো?
সেলিনা হোসেন: বিশ্ববিদ্যালয়ে চর্যাপদ আমাদের পাঠ্য ছিল। চর্যাপদের একটা কবিতার লাইন এমন- ‘রুখের তন্তুলি কুমিরে খাই’। এটি পড়ে আমি বিস্মিত হতাম। মুখস্থ করে নিয়েছিলাম। ‘রুখের তন্তুলি কুমিরে খাই’ নিয়ে ক্লাসে শিক্ষক একদিন বলেছিলেন, ‘গাছের তেঁতুল কুমিরে খায়’। আমার মনে হলো, এত বড় গাছের তেঁতুল কুমির কী করে খাবে! কুমির তো গাছে উঠতে পারে না। ভাবলাম, দেখি কিছু করতে পারি কি না। চর্যাপদে নানা কিছু পড়েই ‘নীল ময়ূরের যৌবন’ লেখা শুরু করি।
‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’ উপন্যাস লেখা হয়েছে ১৯৪৭ সাল-পরবর্তী সময় থেকে আমাদের জনজীবনের ভেতরে কীভাবে সংস্কৃতির সবকিছু নিয়ে বাঙালি এগিয়ে এসেছে, স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছে, যুদ্ধ করেছে। সবকিছু নিয়ে আমার মনে হয়েছে, গায়ত্রী সন্ধ্যা উপন্যাসের একটি বড় জায়গা। আমাদের জনজীবনের সবটুকু নিয়ে একটা উপন্যাস লেখা দরকার। সে ভাবনা থেকেই লেখা।
প্রশ্ন: এই দুটি উপন্যাস ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য। এ নিয়ে কোনো স্মৃতি আছে?
সেলিনা হোসেন: ভারতের একজন গবেষক ও অধ্যাপক আমাকে বলেছিলেন, ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য। দিল্লিতে বাঙালিদের একটি সংস্থা আছে, সেখানে একটা সেমিনারে গিয়েছি, মঞ্চে আমার পাশে একজন মহিলা বসেছিলেন, তিনি আমাকে বললেন, আমি আপনার ‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’ উপন্যাস পড়াই। আমি বললাম, কেমন করে পড়াবেন। হিন্দি বা ইংরেজিতে গায়ত্রী সন্ধ্যা অনুবাদ হয়নি। তিনি বললেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে বাংলাটাই পড়াই আমি। ওখানে বাঙালি ছেলেমেয়ে আছে তাদেরই গায়ত্রী সন্ধ্যা পড়াই।
প্রশ্ন: সমাজের অনেকের মধ্য থেকে মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। উত্তরণের উপায় আসলে কী?
সেলিনা হোসেন: আমাদের সমাজে মানবিক মূল্যবোধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে- এ রকম একটি চেতনা মানুষের নানাভাবে ধারণ করে। বিশেষ করে অর্থ, লোভ-লালসা আর ক্ষমতা। এগুলো থেকে উত্তরিত হয়ে আমাদের সবকিছু গভীর মর্যাদায় তুলে ধরতে হবে। সেই জায়গাগুলো থেকে নিজের দেশকে আলোকিত করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
ইউনেসকো ১৯৯৯ সালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সে বছর আমি আমেরিকার একটা সেমিনারে গিয়েছিলাম। তখন বিদেশি অনেক লেখক আমাকে বললেন, এত বড় একটা ঘটনা ঘটল। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করল। কিন্তু তাদের সাহিত্যে অনুবাদ হয় না। আমরা তাদের সাহিত্য পড়তে পারি না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের লেখকদের সাহিত্য অনূদিত হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যাক।
প্রশ্ন: আপনি সাহিত্যের অনুবাদের কথা বললেন। আপনি বর্তমানে বাংলা একাডেমির সভাপতি। বাংলা একাডেমি অনুবাদের দায়িত্বটা নিতে পারে কি না?
সেলিনা হোসেন: অনুবাদের দায়িত্বটা আসলে সরকারিভাবে নেয়া উচিত। প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলা একাডেমি দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে। তবে অর্থের জোগান দিতে হবে সরকারকে। বাংলা একাডেমি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন। এই মন্ত্রণালয় যদি অনুবাদের জন্য আলাদাভাবে বাংলা একাডেমিকে অর্থ প্রদান করে, তা হলে এই জায়গাটার অপূর্ণতা দূর হতে পারে।
প্রশ্ন: আপনি সভাপতি থাকা অবস্থায় এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে আশা করি পদক্ষেপ নেবেন।
সেলিনা হোসেন: আমি অবশ্যই বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নুরুল হুদাকে বলব। উনি যেন এই জায়গাটা নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন।
প্রশ্ন: আপনার বেশ কয়েকটি বইয়ের নাম নদীর নামে যেমন ‘হাঙর নদীর গ্রেনেড, নদীটির ঘুম ভেঙেছে, যমুনা নদীর মুশায়রা, নদীর সাথে গান, গল্পের নদীতে খেয়াঘাট, এক রূপালী নদীসহ আরও নদী নিয়ে বইয়ের নাম আছে। নদীর প্রতি আপনার বিশেষ ভালোবাসা আছে কী?
সেলিনা হোসেন: নদীর প্রতি আমার প্রবল ভালোবাসা আছে। কারণ আমার শৈশব কেটেছে বগুড়ার করতোয়া নদীর ধারে। আমি অনেকবার করতোয়া নদীর পাড়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে ও বসে থাকতাম। মাঝিদের নৌকা বেয়ে ঘুরে বেড়াতাম। মাছ ধরা দেখতাম। এবং একজন বাড়ুয়া মাঝি যিনি আমাদের খেয়া নৌকা ঘাটের মাঝি ছিলেন। তাকে দিয়ে বলতাম, কাকু আমাদের একটু পাড় করে দেন। তিনি বড়দের নামিয়ে দিয়ে আমাদের পাড় করে দিতেন। আমাদের আট-নয়জনের একটা দল ছিল, সবাই মিলে ঘুরে বেড়াতাম। এভাবে করতোয়া নদী আমার স্মৃতিতে লেখায় প্রবলভাবে উঠে এসেছে। এবং করতোয়া নদীকে আমি যদি এভাবে ভালোবাসার সুযোগ না পেতাম, তাহলে নদীর প্রতি আমার যে জায়গাটি এত প্রশস্ত হতো না। কিন্তু এরপর রাজশাহীতে আসার পর পদ্মা নদীর অনেক কিছু দেখেছি। পদ্মা নদীর পাড়ে অনেক ঘুরেছি। এই পদ্মাও আমার স্বপ্নের একটা জায়গা তৈরি করেছে। আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে আমার শ্বশুরবাড়ি বরিশাল, এখন অবশ্য বরগুনা জেলা হয়েছে। আমি সেখানে অনেক নদী দেখেছি। এবং নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। আমার স্বামীকে বললে সে ছোট নৌকা বা লঞ্চ ভাড়া করে নিয়ে আমাকে নদীর চারদিকে নিয়ে ঘোরাত। বরগুনায় যত নদী সব দেখা। সব জায়গার নদী নিয়েই আমার স্বপ্ন তৈরি হয়েছে ভেতরে। শিশুদের নিয়ে আমি চার-পাঁচটি বই লিখেছি। এবং হাঙর নদীর গ্রেনেডটা বোঝাতে আমি হাঙর শব্দ দিয়ে বুঝিয়েছি আক্রমণ, নদী শব্দ দিয়ে বুঝিয়েছি একটি দেশ ‘ল্যান্ড’; যার মধ্যে শুধু মাটি থাকবে না, নদীও থাকবে। প্রকৃতি থাকবে, আর গ্রেনেড হলো প্রতিরোধের জায়গা।
প্রশ্ন: আপনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এখন পর্যন্ত অনেক লেখা লিখেছেন। এর পরও কি বড় কোনো লেখার পরিকল্পনা আছে। থাকলে যদি বলতেন?
সেলিনা হোসেন: এ বছর আমি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটা উপন্যাস প্রকাশ করেছি, সেটার নাম ‘বধ্যভূমিতে বসন্ত বাতাস’। আমি এইভাবে দেখিয়েছি- হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব পরিবারের ভেতর থেকে উপন্যাসের চরিত্র এনেছি এবং তারা কীভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা দিয়েছেন। সে বিষয়টা তুলে ধরেছি। শুধু মুসলমানের এই দেশটাকে স্বাধীন করেনি, সেটা বোঝাতে চেষ্টা করেছি। বধ্যভূমিতে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাইকে ফেলে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে। এটা আমি অনেক জায়গায় দেখেছি। সুতরাং আমার মনে হয়েছে আমাদের এই সব শহীদের শেষনিশ্বাস স্বাধীনতার বসন্ত বাতাস। সে জন্য আমি উপন্যাসটির নাম এভাবে রেখেছি বধ্যভূমিতে বসন্ত বাতাস।
প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা কতটা জোরাল ছিল?
সেলিনা হোসেন: মুক্তিযুদ্ধে নারীকে নির্যাতন করা শত্রুদের একটা বড় রকমের কৌশল ছিল। সব যুদ্ধক্ষেত্রে এ কৌশল প্রয়োগ করা হয়। পরিবারের একটা মেয়েকে নির্যাতন করলে মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে সবাই খুব মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। আর ওই বিধ্বস্ততার জায়গায় থেকে শত্রুপক্ষ সুযোগটা নিয়ে থাকে, সাহসের জায়গায় ধাক্কা দেয়। এই ঘটনাগুলো বিশ্বজুড়ে ঘটেছে। আমাদের নারীরা ব্যাপকভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। পুরুষ সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ায় নারীরা সমাজ কাঠামো চমৎকার করে ধরে রেখেছেন। এটিও যুদ্ধের নেপথ্যে একটা বড় জায়গা ছিল।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট দিয়ে অসাধারণ একটা কাজ করেছে। এতে অসাধারণ একটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হয়েছিল। ওই সার্টিফিকেটে লেখা আছে প্রথমে নিজের নাম, বাবার নাম, গ্রামের নাম, থানার নাম, জেলার নাম এবং তারপর লেখা ছিল বীর/বীরাঙ্গনা সৈনিক। বীরাঙ্গনাকে সৈনিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন ওই সময় বঙ্গবন্ধু। তিনি এভাবে নারী-পুরুষের মর্যাদার জায়গাটা প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন। তারপর সংসদে নারী সদস্য করেছেন। মন্ত্রিসভায় নারীদের স্থান দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সবকিছুর দ্বার খুলে দিয়েছিলেন। যে নারীরা নির্যাতিত হয়েছিলেন, তাদের অনেক পরিবার বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। চাকরি প্রসঙ্গে তাদের বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বাবা যদি তোমাকে বাবা হিসেবে নাম লিখতে না দেয়, তাহলে বাবার নাম লিখবে শেখ মুজিবুর রহমান।’ আমরা স্বাধীনতা-পরবর্তী এই সমাজব্যবস্থা পেয়েছিলাম। কিন্তু ওই সমাজব্যবস্থার ৪৮ বছর পরও আজ এই নারী নির্যাতন আমাদের জন্য মর্মাহত ঘটনা।
প্রশ্ন: শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীর অগ্রগতি কতটুকু?
সেলিনা হোসেন: শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অনেকটাই অগ্রগতি হয়েছে আমি বলব। তবে পূর্ণমাত্রা অর্জিত হয়েছে, সেটা বলা যাবে না। পূর্ণ অর্জন এখনো হয়নি। আমার মনে হয়, আরও সময় লাগবে। ১৯৭৩ সালে কুমিল্লায় একটি সাহিত্য সম্মেলনে নারীরা ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছিলেন। তেভাগা আন্দোলনে ইলা মিত্র বিশাল একটি ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনিও নির্যাতিত হয়েছিলেন ১৯৫০ সালের ৭ জানুয়ারি ধরা পড়ার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থানায় পুলিশের দ্বারা। কমিউনিস্ট পার্টি যখন তাকে একটা জবানবন্দি দিতে বলে, তখন তিনি অবারিত জবানবন্দিতে সব ঘটনা উল্লেখ করে ওই সমাজব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছিলেন, ধাক্কা দিয়েছিলেন। তা নারীসমাজ প্রগতির রক্ষায় বড় একটা ভূমিকা পালন করেছিল। ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলন তারা অংশগ্রহণ করেছিলেন। নারীরা কখনো পিছিয়ে থাকেননি।
প্রশ্ন: ইদানীং নারী ধর্ষণ বেড়ে গেছে। এর প্রতিকার কীভাবে করা যায়?
সেলিনা হোসেন: বেড়ে যাওয়ার অনেক কারণ আছে। বিশেষ করে মানুষের মূল্যবোধের জায়গা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আর সে জন্য আমাদের একজন ধর্ষককে কঠিন শাস্তি দিতে হবে। একজন ধর্ষককে যদি ফাঁসি দেয়, তাহলে তো আর ধর্ষণ হবে না। আর পাঁচজন লোক ধর্ষণ করার সাহস পাবে না। ফাঁসি দিয়ে যদি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়, তাহলে অন্যরা ধর্ষণ করার সাহস পেত না।
প্রশ্ন: ৫২ বছরের বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে ১০০ বছরের বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান?
সেলিনা হোসেন: আমি একটি মানবিক বাংলাদেশ দেখতে চাই। উন্নয়নের ধারাবাহিকতার সঙ্গে সঙ্গে জনজীবন মানবিকবোধের জায়গায় পৌঁচ্ছে যাক বাংলাদেশ। মানবিক মূল্যবোধে পরিপূর্ণভাবে তৈরি হোক বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ। এটাই প্রত্যাশা সবার কাছে আমার।
প্রশ্ন: আপা দীর্ঘ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সেলিনা হোসেন: তোমাকেও ধন্যবাদ।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা