প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে বিএনপিও বন্ধুত্ব চায় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন,‘একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, যারা বন্ধুত্বের সম্পর্কে বিশ্বাস করে না, আর আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলে দিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো। কিন্তু, বন্ধুত্ব আর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এক নয়।’

রাজধানীর নয়াপল্টনে সোমবার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম এই মানববন্ধন আয়োজন করে।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন,‘আমরাও ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্ব অনিবার্য দরকার। কিন্তু তারা যদি আমাদের রক্ষিতার মর্যাদা দেয়, কিন্তু সেই বন্ধুত্ব তো জনগণের জন্য কাম্য নয়। সেইজন্য বলবো এখানে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার যারা আছেন, যারা নিয়মিত খবর পাঠান, তারা জনগণের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে শিখুন।’

ভারতের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বন্ধুত্ব কি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে করবেন নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব হয় সেটা হবে প্রকৃত বন্ধুত্ব। সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। শুধু একজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে কোনো লাভ হবে না।’

প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বক্তব্য দেয়া রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'তিনি (চাঁদ) বলেছেন, শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠাতে হবে। কবরে তো সবাই যায়। যদি মৃত্যু ভয়ে আতঙ্কিত হন তাহলে ক্ষমতায় থাকার দরকার কী। ক্ষমতা ছেড়ে দেন। ক্ষমতা ছেড়ে জনগণের অধিকার, ভোট ফিরিয়ে দেন।’

বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যারা ভোট চোর, ভোট ডাকাতি করে তাদের ক্ষমতায় রেখে যাওয়া যাবে না। আজকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন, অবৈধ সংসদ ভেঙে দিবে, নির্বাচন কমিশনকে নির্বাসিত করবে, নিরপেক্ষ সরকার হবে- এমন ঘোষণার সঙ্গে-সঙ্গে সবাই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে।’

বিএনপির এই নেতার দাবি, ‘১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার বন্ধু, স্বজনরা মরদেহ দাফন করে ক্ষমতার লোভে শপথ নিতে গেছেন। এখন যে সেই রকম লোক আওয়ামী লীগে নেই এটা ভাবে কেন? বিএনপি হত্যার রাজনীতি করে না, করবেও না, এটাতে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রের জন্য বিএনপির জন্ম হয়েছে।’

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যার পর সাংবাদিকদের মধ্যে কোনো প্রতিবাদ হয় না দাবি করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘কেন আপনারা একদিন টেলিভিশন বন্ধ রাখতে পারেন না? কেন একদিন অফিসে না গিয়ে পারেন না? তার জবাব জনগণের কাছে দিতে হবে আপনাদের। সাগর-রুনি হত্যার কেন প্রতিবেদন আসে না? আপনাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বানালো আর হত্যা হালাল হয়ে গেল।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদসহ অন্যরা।