জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই সেন্টমার্টিন ইস্যুকে সামনে আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটির নেতারা বলেছেন, ‘যদি সত্যি সত্যিই কেউ সেন্টমার্টিন চেয়ে থাকে তাহলে সেটা সরকারের স্পষ্ট করে বলা দরকার, জনগণকে জানানো দরকার কে কবে তা চেয়েছে।’
বৃহস্পতিবার গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক যৌথ বিবৃতিতে সব কথা বলেন।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সরকার সেন্টমার্টিন ইস্যুকে সামনে নিয়ে এসেছে। এরা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে সবার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং এখন দেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও খেলায় মত্ত হয়েছে। মূলত দেশব্যাপী যখন সরকার পতনের আন্দোলন তীব্রতর হচ্ছে ও সরকারের আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রায় শেষ ঠিক তখনই সেন্টমার্টিন ইস্যু সামনে এলো।’
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সেন্টমার্টিন ইস্যুতে দেয়া বক্তব্য তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপ কাউকে লিজ দিলে ক্ষমতায় থাকতে অসুবিধা নেই। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না।’ এর পূর্বে সরকারি জোটের আরও দুজন নেতা যথাক্রমে রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনুও সেন্টমার্টিন বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তবে তারা এই বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে আসীন থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং এ ধরনের অনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক। যদি সত্যি সত্যিই কেউ সেন্টমার্টিন চেয়ে থাকে তাহলে সেটা সরকারের স্পষ্ট করে বলা দরকার, জনগণকে জানানো দরকার কে কবে তা চেয়েছে। ইতিপূর্বেও ভারতে গ্যাস রপ্তানি নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য আমরা প্রধানমন্ত্রীকে দিতে দেখেছি যা পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়নি। ফলে এই বক্তব্যকেও সেই একই ধারায় বিবেচনা করা যেতে পারে। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা।’
সরকারের সমালোচনা করে নেতারা বলেন, ‘দেশের জনগণ যখন তাদের হারানো ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ক্রমাগত ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন তখন তাকে বিভ্রান্ত করাই এ ধরনের বক্তব্যের লক্ষ্য বলে সহজেই অনুমান করা যায়। দেশকে যদি কেউ বিপদের ভেতরে ফেলে, দেশের সার্বভৌমত্ব যদি কেউ বিপন্ন করে তাহলে সেটা করছে বর্তমান সরকার।’
সরকারের পাতা ফাঁদে নেতারা পা দিবে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এসব পাতা ফাঁদে জনগণের আন্দোলন পা দেবে না। বরং সকল বিভ্রান্তিকে পায়ে ঠেলে এই দেশের জনগণ ফ্যাসিস্ট এ সরকারের পতন করার মধ্য দিয়ে সকলের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করে সত্যিকার সার্বভৌম বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাবে।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা