আপডেট : ২৩ জুন, ২০২৩ ২১:৩২
প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক চেয়ারম্যান বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার

প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক চেয়ারম্যান বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার

প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম

অর্থপাচার মামলায় প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় গত বুধবার মধ্যরাতে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে মামলার তদন্ত সংস্থা অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়।

সিআইডির ফাইনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান শুক্রবার জানান, আবুল কাশেমের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক শুনানির জন্য ২৫ জুন ধার্য করেন। একই সঙ্গে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত বুধবার অর্থপাচারের ওই মামলায় আলোচিত ই-কমার্স কোম্পানি আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর আলম শিকদার এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেমসহ চারজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

নিষেধাজ্ঞাভুক্ত বাকি দুজন হলেন আলেশা মার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও মঞ্জুর আলমের স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরী এবং আলেশা মার্টকে মোটরসাইকেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস কে ট্রেডার্সের মালিক মো. আল মামুন। আবুল কাশেম গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা এখনো পলাতক।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালকের পদ পাওয়ার জন্য এবং শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে হাজারো গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া এক শ কোটি টাকা মঞ্জুর আলম ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে দিয়েছিলেন।

প্রতারণার শিকার প্রায় তিন হাজার গ্রাহকের আবেদনের ভিত্তিতে তদন্তে প্রমাণ মিললে গত ৩১ মে এই চারজনসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে সিআইডি।

ওই চারজনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আলেশা মার্ট লিমিটেড, আলেশা হোল্ডিং লিমিটেড, আলেশা কার্ড লিমিটেড, আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, আলেশা টেক লিমিটেড, অলেশা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, আলেশা রাইড লিমিটেড, আলেশা এক্সপোর্ট ইমপোর্ট লিমিটেড, আলেশা ফার্মেসি লিমিটেড, আলেশা অ্যাগ্রো লিমিটেডের বিরুদ্ধেও মামলা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, তারা বিভিন্ন অফার দিয়ে বহু গ্রাহকের কাছ থেকে মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিক বিভিন্ন পণ্য সরবরাহের জন্য অগ্রিম অর্থ নিয়ে পণ্য বা টাকা ফেরত না দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং (অর্থপাচার) অপরাধ করেছে।

সিআইডি বলছে, চারটি বেসরকারি ব্যাংকে আলেশা মার্টের চারটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৪২১ কোটি টাকা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৩১ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ কেনা হয়েছে। ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৫ আগস্টের মধ্যে কেনা হয় এই সম্পদ।

মঞ্জুর আলমের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীর তথ্য তুলে ধরে সিআইডি বলছে, বেতন ও আনুষঙ্গিক বেতন মিলিয়ে মঞ্জুরের আয় ছিল মাত্র ১৩ লাখ ৯০ হাজার। অথচ সাত মাসের ব্যবধানে তিনি ৩১ কোটি টাকার সম্পদ কেনেন।

মামলার অন্য তিন আসামির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তারা এরই মধ্যে দেশের বাইরে চলে গেছেন কি না, এমন কোনো তথ্য নেই।