নারায়ণগঞ্জে আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। গত রোববার রাত থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

এর মধ্যে সকালে সাইনবোর্ড এলাকায় হিমাচল পরিবহনের একটি বাসের চাপায় সাইদুর রহমান (৫৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদরের গোগনগর এলাকার মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে। কাজ করতেন অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক হিসেবে।

আর বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুঁড়ি এলাকায় বন্ধু পরিবহনের বাসের ধাক্কায় জয়দেব সাহা নামে একজনের মৃত্যু হয়। তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।

এর আগে রোববার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় ট্রাকচাপায় জিহাদ হোসেন নামে এক অটোরিকশার যাত্রী নিহত হন। তিনি জামালপুর জেলার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। জিহাদ আদমজী ইপিজেডের একটি গার্মেন্টেসের টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

একই সময়ে শহরের বাবুরাইল বৌ-বাজার এলাকায় প্রাইভেটকারের চাপায় আলমগীর নামে এক পথচারী নিহত হন। তিনি শহরের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা। আইডিয়াল নামে একটি মিষ্টান্ন ভান্ডারের ম্যানেজার ছিলেন আলমগীর।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন সাঈদুর রহমান। পথে সাইনবোর্ড এলাকায় তার মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় হিমাচল পরিবহনের বাস। এসময় সাঈদুর রাস্তায় পড়ে গেলে তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে গাড়িটি। তখন স্থানীয়রা বাসটিকে চালকসহ আটক করে। তবে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাঈদুরের

বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুঁড়ি এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাওয়ার সময় বন্ধু পরিবহনের বাসের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে যান জয়দেব সাহা। এসময় তাকে চাপা দেয় বাসটি। ওই দুর্ঘটনার পর প্রায় এক ঘণ্টা সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ করে অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আযম জানান, সাঈদুরকে চাপা দেয়া হিমাচল বাসের চালক শহীদুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বাসটিও। জালকুঁড়িতে জয়দেব সাহাকে চাপা দেয়া বাসটিকেও জব্দ করা হয়েছে। আর চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।

রোববার রাতের দুর্ঘটনায় আলমগীরের মৃত্যুর বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমান জানান, বাবুরাইল বৌ-বাজার এলাকায় প্রাইভেটকারের চাপায় গুরুতর আহত আলমগীরকে হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান।

আর জিহাদের মৃত্যুর বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, ঈদের ছুটিতে অটেরিকশায় নববধূকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন জিহাদ। গোদনাইল এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে জিহাদ ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান। ওই সময় ট্রাকটি তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান জিহাদ।

নিহত চারজনের মরদেহই উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং সড়ক আইনে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।