আপডেট : ৬ জুলাই, ২০২৩ ১৯:১২
বিএনপি আর অ্যামিবার মধ্যে মিল পাওয়া যাচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিএনপি আর অ্যামিবার মধ্যে মিল পাওয়া যাচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: দৈনিক বাংলা

বিএনপি ও অ্যামিবার মধ্যে মিল খুঁজে পেয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘অ্যামিবা মাঝে-মধ্যে নিজেকে দ্বিখণ্ডিত করে বাড়ে, সুতরাং বিএনপি আর অ্যামিবার মধ্যে প্রচুর মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। ১২ দল আর ৩৬ দলের নাম যদি মির্জা ফখরুল সাহেব মুখস্ত বলতে পারেন আমি উনাকে ধন্যবাদ জানাবো।’

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এখন বিএনপির জোটে কত দল সেটা নিয়ে একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা মাস্টার্সে অন্তত থিসিস হতে পারে। কারণ তারা কোনো সময় বলে ৩৬ দল, কোনো সময় ৫২ দল, কালকে মিটিং করলো ১২ দল। আবার মির্জা ফখরুল সাহেব কয়েকদিন আগে বলেছেন- আমরা যে জোটটা করেছিলাম সেটা ভেঙে দিয়েছি এখন আবার দেখা যাচ্ছে ১২ দলের সঙ্গে মিটিং করছে।’

সম্প্রতি বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে ইইউ রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যাদের কাছে গিয়ে বারবার ধর্ণা দেয় তাদের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেছেন- হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াও এগুলো করা যাবে না। এগুলো গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করে। তারা যে ক্রমাগতভাবে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করেছে সেই কথাটিই ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে। এটি বিএনপির অপরাজনীতির ওপর বিরাট চপেটাঘাত।’

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে যেভাবে নির্বিচারে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা পরিচালনা করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষ নিহত হচ্ছে, এর তীব্র নিন্দা জানাই। পৃথিবীর মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিভিন্ন দেশে পান থেকে চুন খসলে বিবৃতি দেয় বা অনেক ক্ষেত্রে বিবৃতি বিক্রি করে আর এই ক্ষেত্রে তারা নিশ্চুপ।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আর যে সমস্ত দেশ মানবাধিকার নিয়ে নানা দেশকে পরামর্শ দেয়, তাদেরও কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যা খুবই দুঃখজনক। ফিলিস্তিনে যখন শিশুরা পাথর ছোড়ে সেটির প্রত্যুত্তরে ইসরাইলি বাহিনী বৃষ্টির মতো গুলি ছোড়ে, নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে যা অত্যন্ত দুঃখের ও নিন্দাজনক। তবে যারা পৃথিবীতে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে তাদের নীরবতা আরও বেশি দুঃখজনক।’

তথ্যমন্ত্রী ও সরকারকে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের ধন্যবাদ

দেশে চলচ্চিত্র শিল্পের পুণরুত্থানে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, মহাসচিব শাহিন সুমন, সাংস্কৃতিক সচিব শাহিন কবির টুটুল, চলচ্চিত্রগ্রাহক সংস্থার সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু, চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, সদস্য ইউনুস রুবেল, সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের সদস্য সচিব শাহ আলম কিরণ, এডিটরস গিল্ড সভাপতি আবু মুসা দেবু, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, প্রযোজক অপূর্ব রানা চলচ্চিত্র জগতের ঘুড়ে দাঁড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানান।

চলচ্চিত্র পরিষদ নেতারা তাদের বক্তৃতায় বলেন, ‘ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আটটি এবং ঈদুল আজহার সময় পাঁচটি মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র সারাদেশে দর্শকদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক সিনেমা হল খুলেছে। সরকার সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে এক হাজার কোটি টাকার সহজ ঋণ তহবিল দিয়েছে, বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান দিচ্ছে। এ সবই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা এবং তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের নিরলস প্রচেষ্টার ফসল। এ জন্য আমরা মন্ত্রী ও সরকারকে কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জানাই।’

কাজী হায়াৎ তথ্যমন্ত্রীকে ‘চলচ্চিত্রের বন্ধু’ আখ্যা দেন। সুদীপ্ত দাস সহজ ঋণে দেশব্যাপী সিনেমা হল গড়ে তুলতে অব্যাহত প্রচেষ্টার অঙ্গীকার করেন। ইলিয়াস কাঞ্চন ভালো কনটেন্ট নির্মাণের ও শাহিন সুমন বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান বৃদ্ধির আহবান জানান। আবু মুসা দেবু তথ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সিনেমা হল রাখার অনুরোধ জানান।

চলচ্চিত্র পরিষদের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভালো কাজের প্রশংসা হলে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। আমাদের দেশে ভালো কাজের প্রশংসা তেমন হয় না, কোনো ভুল হলে সেটি নিয়েই মাতামাতি হয়।’

তিনি বলেন, ‘বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি, সিনেমা হলের সংখ্যা একশ’র নিচে নেমেছিলো, এখন বেড়ে এক পর্দার সিনেমা হল আর সিনেপ্লেক্স মিলে প্রায় দুইশ’ হল চলছে। শুনে তিনি অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্রের বড় সুহৃদ।’

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পের এই ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে শুধু সরকারের সহযোগিতাই কাজ করেছে তা নয়, চলচ্চিত্র জগতের সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এই শিল্পের সাথে থাকা, শিল্পকে ধরে রাখা, সিনেমা বানানো এবং লোকসান দিয়েও হল বন্ধ করে না দেওয়া এগুলো নিশ্চিতভাবে কাজ করেছে। আমাদের পরিচালক, শিল্পী-কলাকুশলীরা বিশ্বমানের, অনেক আন্তর্জাতিক উৎসবে তারা পুরস্কৃত হয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে বিশ্বাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া’