ছোট একটি স্যাটেলাইট। চাঁদের আশপাশে পরিভ্রমণ শেষে অবতরণ করবে। সেখান থেকে প্রাপ্ত তথ্য দিয়ে চলবে গবেষণা। স্বপ্ন নয়, সব ঠিক থাকলে আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে চাঁদের উদ্দেশে উড়াল দেবে ছোট্ট এই স্যাটেলাইটটি। এমন প্রস্তুতি নিচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সঞ্জিত মণ্ডল ও তার টিম।
সঞ্জিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে মাস্টার্স করছেন। পাশাপাশি রোবটিক্স নিয়ে কাজ করছেন। কুমিল্লায় রোবটিক্স নিয়ে কাজ করে বেশ জনপ্রিয়তা পান সঞ্জিত। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সহয়তায় রোবট নিকো তৈরি করে সাড়া ফেলেছিলেন সঞ্জিত ও তার টিম।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা স্যাটালাইট নিয়ে কাজ করবে বিশ্বের এমন ২২টি দেশকে নির্বাচন করে। এই মিশনে সঞ্জিতের দল ‘টিম বাংলাদেশ’ও নির্বাচিত হয়।
নাসা বাংলাদেশের এই টিমের কাছে একটি স্যাটেলাইট পাঠিয়েছেন। এখন তাদের কাজ হচ্ছে, তা পরিপূর্ণ ডিজাইন করে নাসার কাছে পাঠানো। নাসার উদ্যোগে তা চাঁদের মাটিতে পা ফেলবে। নাসার শর্ত, স্যাটেলাইটটির ওজন সর্বোচ্চ ২০ গ্রাম। কিন্তু ‘টিম বাংলাদেশ’ তা পাঁচ গ্রামে করার চেষ্টা করছে। এই স্যাটেলাইটের কাজ, চাঁদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা।
২০২৪ সালে এই স্যাটেলাইট চাঁদের উদ্দেশে পাঠানোর সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্যাটেলাইট তৈরি ও উৎক্ষেপের এই মিশন নিয়ে সঞ্জিত মণ্ডল বলেন, আমরা একটা স্যাটেলাইট তৈরি করছি। স্যাটেলাইটের যাবতীয় সরঞ্জাম নাসা আমাদের প্রোভাইড করেছে। a2i আমাদের ল্যাব সাপোর্ট দিচ্ছে। নাসা আমাদের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও রেখেছেন আমি এবং আমাদের টিম সফলভাবে ভার্চুয়াল ট্রেনিংটি সম্পন্ন করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্যাটেলাইটটি তৈরি করার পর ওই স্যাটেলাইটের প্রোগ্রামিং আমাদেরই করতে হবে এবং খুব সম্ভবত সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে বাংলার মাটি থেকে নির্মিত প্রথম স্যাটেলাইট অবতরণ করবে চাঁদের মাটিতে। আমাদের স্যাটেলাইটগুলো চাঁদের মাটিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেবে নাসা। আমাদের স্যাটেলাইট তৈরির কাজটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা নাসার কাছে সাবমিট করব। নাসায় আরও যাচাই-বাছাই শেষ করে গ্রিন সিগন্যাল পেলেই আমাদের তৈরি স্যাটেলাইটটি নাসা সম্ভবত ২০২৪ সালে চাঁদে পৌঁছে দেবে।
সঞ্জিত বলেন, স্যাটেলাইট চাঁদে যাওয়ার পর আমরা স্যাটেলাইট থেকে চাঁদের সব ধরনের তথ্য সরাসরি বাংলাদেশে বসেই পাব। আমরা সেই ডাটাগুলো এনালাইসিস করব আমাদের নিজস্ব ফিউচার মিশনের কাজে ব্যবহার করার জন্য। আমাদের টিমের নাম ‘টিম বাংলাদেশ’। টিমের অ্যাস্ট্রোফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রো রোবটিক্স স্পেশালিস্টের দায়িত্বে আছি। আমাদের টিমের লিডার জাহিদ হাসান শোভন।
চাঁদে যাওয়ার ফাইনাল ডেট আমাদের নাসা জানাবে তাই আগেভাগে কিছু বলতে পারছি না। তবে লঞ্চিংয়ের কয়েক মাস আগে জানতে পারব। তবে আমরা যে স্যাটেলাইট নিয়ে কাজ করছি, সেটি পৃথিবীর সর্বাধুনিক ফেমটো স্যাটেলাইট, আয়তনের ছোট এবং অত্যন্ত কম ভরসম্পন্ন fastest ডাটা ট্রান্সমিশন স্যাটেলাইট।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা