মাদারীপুরে বৃদ্ধকে থানায় নিয়ে পিটিয়ে হাত ভাঙার অভিযোগে শিবচর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুরে ভুক্তভোগীর মামলা দায়েরের পর মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অভিজিৎ চৌধুরী এ আদেশ দেন।
এ ঘটনার ভুক্তভোগী আকমান মাদবর (৬০) শিবচর উপজেলার সরকারেরচর এলাকার মৃত আলাউদ্দিন মাদবরের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আকমান মাদবর একটি পাট কাটা মামলার ৪ নম্বর আসামি। আদালতের নির্দেশক্রমে তিনিসহ ওই মামলার আরও চার আসামিকে গত ৯ জুলাই গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন এসআই নূর মোহাম্মদ। এদের মধ্যে আকমান মাদবরকে থানার দোতলার একটি কক্ষে নিয়ে যান তিনি। পরে তাঁকে অমানসিক নির্যাতন করা হয়। এতে তাঁর বাম হাত ভেঙে যায়। পরে তাঁকেসহ ওই চার আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়। এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন আকমান মাদবর। এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে এসআই নূর মোহাম্মদকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী আকমান মাদবর। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী আকমান মাদবর বলেন, ‘পুলিশের এসআই নূর মোহাম্মদ আমাকে থানার একটি রুমে নিয়ে বেঞ্চের নিচে মাথা দিয়ে সারা শরীরে লাঠি দিয়ে পেটান। পরে প্রস্রাব ও থুথু ফেলে আমাকে দিয়ে চাটাইছে। একপর্যায়ে আমাকে দিয়ে কয়েকবার আব্বা ডাকান ওই পুলিশ সদস্য। এই ঘটনা কাউকে বললে আবারও নির্যাতন চালানোর হুমকি দেন তিনি। পরে হাসপাতালে ভর্তি হই। এ ঘটনায় ওই নির্যাতনকারী পুলিশের সাজা দাবি করি।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন বলেন, ‘থানায় বসে কোনো আসামিকে এভাবে নির্যাতন করার আইনগত অধিকার কারও নেই। ভুক্তভোগীর করা মামলা আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামীতে যাতে কোনো পুলিশ এমন নির্মম অত্যাচারের কাজ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সঠিক তদন্ত আশা করছি। আমরা ন্যায়বিচার কামনা করছি।’
এদিকে মামলার বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি আসামিসহ জেলা পুলিশের কোনো কর্মকর্তা। তারা বিষয়টি আইনগতভাবেই মোকাবিলার আশ্বাস দেন।
মাদারীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা