আপডেট : ২৩ জুলাই, ২০২৩ ১০:৩৪
একাত্তর যখন আমাদের সময়ে নিষিদ্ধ
হাবীব ইমন

একাত্তর যখন আমাদের সময়ে নিষিদ্ধ

কিছুদিন আগে, অ্যালেন্স গিন্সবার্গের লেখা ‘যশোর রোড অন সেপ্টেম্বর’ কবিতা অবলম্বনে গীতিনাট্য দেখছি- একাত্তরের দৃশ্যগুলো দেখছি, শিহরিত হচ্ছি, চোখ ভিজে যাচ্ছে। কী নির্মম আর নৃশংসতার ভেতর দিয়ে আমাদের যেতে হয়েছে। একাত্তর আর মুক্তিযুদ্ধ- দুটিই আমার জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ। একটি দেশ বানানোর জন্য যে লড়াই- যে মুক্তিসংগ্রাম হয়েছে, তা আমার ভেতরে প্রোথিত হয়েছে জন্মের পরপরই। ভীষণ আবেগাপ্লুত হই আমি। আমার সারা জীবনের সব সংগ্রাম আর লড়াইয়ের মূল শক্তি এই মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ আমাকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে, এ সত্যকে অনুধাবন করতে করতেই আমি কিশোর- পুরোদস্তুর সংস্কৃতিকর্মী তখন। সেই সব দিনের কথা প্রায়ই মনে হয়। অনেক কিছু হয়তো আমরা করতে পারিনি, অনেক কিছু করা দরকার ছিল। এই দিকটিতে খুব অপরাধ বোধ করি। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন, আমি মফস্বলের ছেলে, বারবার মেঘনার করালগ্রাসের শিকার, শান্ত-স্থির নোয়াখালীর মাইজদী শহরে আমার জন্ম।

ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর তিন লাখ নারীর নির্যাতন- এমন ইতিহাসের ওপর যে রাষ্ট্রের জন্ম, সেই রাষ্ট্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর মুক্তিযুদ্ধ একটি ‘নিষিদ্ধ’ শব্দে পরিণত হয়ে ছিল দীর্ঘকাল। তবে গোটা বাংলাদেশকে পাল্টে দেয়া যেহেতু দুঃসাধ্য, তাই কেটে-ছেঁটে সেটিকে বানানো হয়েছিল স্বাধীনতাযুদ্ধ।

২৫ মার্চের কালরাতে ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালির ওপর কোনো এক ‘হানাদার বাহিনী’র আক্রমণের বিকল্প হিসেবে এ দেশের মানুষ এক সেনা অফিসারের ‘স্বাধীনতাযুদ্ধের’ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে গেল, মূলত সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর এবং পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হলো- এমনই এক ‘স্বাধীনতাযুদ্ধ’ নির্মাণ করা হলো স্কুলের পাঠ্যপুস্তক, গণমাধ্যম, বিটিভির নাটক- এমনকি উপন্যাস-চলচ্চিত্রেও। আপাত নিরীহ এই নির্মাণে সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে জন্ম নেয়া পাকিস্তানে বাঙালি ও এই ভূখণ্ডের অন্যান্য জাতিসত্তার দীর্ঘ ২৪ বছরের সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক মুক্তির লড়াই, যা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অনিবার্য করে তুলেছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশের অবয়ব। সেই সংগ্রামকেই মুছে ফেলা যায়, মুছে ফেলা যায় এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পেছনের মুক্তিকামী মানুষের আকাঙ্ক্ষায় নেতৃত্বের স্বরূপ এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের চেহারা, সেটাই আমরা দেখেছি।

ক্ষমতাসীনের ইচ্ছা অনুযায়ীই ইতিহাস নির্মিত হয়, ইতিহাসের বদল হয়। তাই বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যাকারী সেনা ছাউনি থেকে বের হয়ে আসা ক্ষমতাবানরা দেশ শাসনের ভার নিয়েই প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে খর্বিত করে। ১৯৭১ সালকে ‘গণ্ডগোলে’র বছর বানিয়ে ফেলে। একাত্তরে অস্ত্র জমা না দেয়া ছিনতাইকারী হিসেবে এবং মুক্তিযুদ্ধের রাজাকার, আলবদর, আল-শামসদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে। ফলে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেই শিল্পী কামরুল হাসান ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করুন’ নামের যে পোস্টারটির মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ডাক দিয়েছিলেন, সেই বিচারের দাবিও যেন নিষিদ্ধ হয়ে যায় চিরতরে। একাত্তরে যারা বিরোধিতা করেছিলেন, তারাই এ দেশের ভাগ্যনিয়ন্ত্রক হয়ে যায়। এর মধ্যে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ডাক দেন একাত্তরের ঘাতক-দালালদের নির্মূল করার। আমরা উজ্জীবিত হই- আমাদের সময়টা আন্দোলিত হয়।

বারুদ জমা হয়েই ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুধু একটা সময়ের জনযুদ্ধ নয়, প্রাত্যহিক জীবনের একটা অংশ, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে আমরা বেড়ে উঠেছি। এ লড়াইটা আমাদের করে যেতে হয়েছে, যেতে হবে অদূরেও।

নানাবিধ প্রতিকূলতা আর প্রতিবন্ধকতার ভেতর দিয়ে সেই সব দিন আমরা অতিক্রম করেছি, যে সময়টাতে একাত্তর আর মুক্তিযুদ্ধ নিষিদ্ধ ছিল। যে তিক্ত-মধুর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, সেই কথা-সেই গল্পগুলো বলা প্রয়োজন। হত্যার হুমকি মাথায় নিয়ে নিঃশঙ্কচিত্তে আজও গলা মেলাই-দেশমাতৃকার চিত্তে বুক পেতে রই। তবু মাঝে মাঝে নিজেদের কিছু ইতিহাস বলা প্রয়োজনবোধ করছি। নানা বাঁকে ইতিহাসের যে বদল ঘটে, সেটা তো আমরা এর আগে বিভিন্ন কালে দেখেছি। তবে সুখকর একটি বিষয়, মুক্তিযুদ্ধকে ব্যক্তিমালিকানায় নেয়ার চেষ্টা যারাই করুক না কেন, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ইতিহাসের ‘সত্য’ সঞ্চারিত হয়েছে। তবে নির্মোহ এখনো হয়ে উঠতে পারেনি, সে ক্ষেত্রে আরও পাঠ প্রয়োজন।

ইতিহাস বিকৃতির নানা অপচেষ্টা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম তার পরবর্তী প্রজন্মকে জানিয়ে গেছে গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে, ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্যের আদান-প্রদান সহজতর হয়েছে। প্রকৃত ইতিহাস- শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মের কাছে আর গোপন নেই মুক্তিযুদ্ধ। এটাও মাথায় রাখতে হবে, মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃতি করতে সাইবার দুনিয়ায় তাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে, সেগুলো কখনো কখনো সাইবার বুলিং হচ্ছে। সেদিকে আমাদের দৃষ্টি আরও তীক্ষ্ণ হতে হবে।

আমরা দেখেছি আত্মস্বীকৃত যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা এবং তাদের সদম্ভ উচ্চারণ ছিল, ‘এ দেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই’। সেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ তরুণরাই ২০১৩ সালে শাহবাগে আন্দোলন করেছিল। নব্বইয়ের পরে এ আন্দোলনকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঘটনা বললে ভুল হবে না। ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে পোস্টার লিখেছিলাম, ‘বিচারক ভুল করে কাঁদে শহীদপ্রাণ’।

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম আমাদের দীক্ষিত করেছেন, যুদ্ধাপরাধী বিচারের দাবিতে তার জীবনভর সংগ্রামের ভেতর দিয়ে। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ তারই উদ্যোগে গণআদালতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছিল। তবে সত্য, কোনো যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করার ক্ষমতা এই আদালতের হাতে ছিল না। বিচারটি ছিল প্রতীকধর্মী। তাতে অজানাকে জানার, উপলব্ধি করার তাগিদটাই ছিল বড় বারুদ। তৎকালীন সরকার জাহানারা ইমাম এবং সেই আদালতের কর্মকাণ্ডকে রাষ্ট্রবিরোধী বলে চিহ্নিত করেছিল, এবং তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছিল। ১৯৯৪ সালে তিনি প্রয়াত হলেন, তার মৃত্যুর সময়ও এ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার হয়নি। কিন্তু জানতেন তরুণরা একদিন জাগবে। তারা ফিরিয়ে আনবে মুক্তিযুদ্ধ।

২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। ১৯৯১-এর বিএনপি আর তখনকার বিএনপির মধ্যে বিস্তর ফারাক। তখন বিএনপির মধ্যে কিছুটা সহনশীলতা ছিল, আর ২০০১ সালে বিএনপির ভেতরে এবং বাইরে জামায়াত-শিবিরের বিষাক্ত গন্ধ ছড়াতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়, ছিনতাই করে।

আমি তখন পলাশকুঁড়ি খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক। আমাদের সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানায় অনুষ্ঠান করার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে চাই, এই প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগাতে চেয়েছি। আমরা অনুষ্ঠান করার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। সূচনা বক্তব্যে খুব স্পষ্ট ছিল আমাদের কথা, তা হলো- মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও সদ্য প্রয়াত মনজুর হাছান লিটন। আমার বক্তব্য শেষ হওয়া মাত্রই আমাকে একদল বিএনপিমুখী সংস্কৃতিকর্মী বলে, অনুষ্ঠান করা যাবে না। উল্লেখিত তিনটি বিষয়ে মঞ্চে বলা যাবে না। সেদিন আমি তাদের কথা শুনিনি। অনুষ্ঠান শেষে আমার দল নিয়ে সদম্ভে মঞ্চ থেকে নেমে এসেছি।

ওই একটা লম্বা সময়ই আমাদের বহু বিপদ মাথায় নিয়ে পার করতে হয়েছে। আমরা অনুষ্ঠান করতে পারিনি। কিন্তু আমরা থামিনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের কাজ নিরন্তর ছিল। আমরা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট থেকে বিজয় উৎসব করি, প্রকাশনা করি। সেখানে আমরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি। নোয়াখালী টাউন হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে যখন আমরা জাতীয় কবিতা পরিষদ থেকে অনুষ্ঠান করেছি, কামাল লোহানী, সেলিনা হোসেন, আবেদ খান, বেলাল চৌধুরী, আসাদ চৌধুরী তখন মঞ্চে, ওই সময়ে টাউন হলের টিনশেডে ইট ছোড়া হয়, আমাদের গালিগালাজ করে। সেই অনুষ্ঠান আমরা বন্ধ করিনি। আমরা জেগে ছিলাম। এরকম অসংখ্য ঘটনা আছে।

২০০৫ সালের কথা। আমি ঢাকায় ফিরব, নোয়াখালীতে ওই দিন আমার শেষ দিন ছিল, শেষ দিন বলতে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আসা হয় স্থায়ীভাবে। গিয়েছিলাম নোয়াখালী পৌরসভায়। ওখানে একটি লোক আমার সামনে আসে। প্রথমে কায়দা করে খুব আন্তরিকতা দেখায়। এরপর আমাকে বলে, আপনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কাজ করবেন না। ওদের বইগুলো নাস্তিক, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বেশি। ওগুলো বাচ্চাদের পড়াবেন না।

ফিরে আসি শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে- এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য যুদ্ধাপরাধী বিচারের দাবিকে ধর্মবিরোধী, বিশেষ করে ইসলামবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র বলে প্রচার করছিল, একটি বিশেষ দৈনিকও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে উসকে দিয়েছিল। শাহবাগ চত্বরে সমাবেশের পাল্টা শাপলা চত্বরে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী সমাবেশ গড়ে তোলার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ২০১২ সালে গঠিত ওলামা মাশায়েখদের ‘হেফাজত ইসলাম’ নামক সংগঠনকে সক্রিয় করা হয়। শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ শুরু হয়েছিল ৫ ফেব্রুয়ারি, আর হেফাজতের প্রথম সমাবেশের ডাক দেয় ৬ এপ্রিল। গণজাগরণ মঞ্চের আয়োজকদের বলা হলো ‘নাস্তিক’। নাস্তিক বুলিটি একধরনের বিদ্বেষ-ছড়ানো গালি। এটাতে হত্যাকে বৈধতা দেয়া হয়। যুদ্ধাপরাধী শক্তি একাত্তরের মতো খুনখারাবির পথ ধরল। রাজীব হায়দার নামে এক তরুণ তাদের প্রথম হত্যার শিকার। ব্যক্তি কাদের মোল্লা কিংবা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি গুরুত্বপূর্ণ, তবে অলিগলিতে তাদের প্রজন্ম কিংবা দোসরদের মধ্যে যে নতুন নতুন কাদের মোল্লা জন্ম নিচ্ছে, সেগুলোর জন্মপ্রক্রিয়া বন্ধ করা জরুরি। তবে এসব আমাদের জন্য বলা সহজ, রাজনীতিবিদদের জন্য বাস্তবায়ন এত সহজ নয়। তারা চায় না মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, তাই নিষিদ্ধ হয়নি সেই যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন, বরং তাদের অর্থের উৎসগুলো আরও মহীরুহ হয়ে উঠেছে।

জনগণের হাত থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ফসল এই দুটি জিনিসের মালিকানা চলে গেছে। জনগণ শব্দটাকে রাজনৈতিক দলগুলো বারবার ধর্ষণ করেছে, নিজ নিজ স্বার্থের জায়গা থেকে ব্যবহার করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মালিকানা হারানো জনগণ একসময় নিজের অস্তিত্বের মালিকানাই হারিয়ে ফেলেছে মূলধারার রাজনীতির নির্বাচনকেন্দ্রিক অপচর্চায়। ৯১ নির্বাচনে বিএনপির কৌশলগত ঐক্য এবং ৯৬-এর নির্বাচনে জেতার জন্য সে সময় যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ যে আন্দোলনের ঐক্য গড়ে তুলেছিল তা প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে জামায়াতকে এক ধরনের রাজনৈতিক বৈধতা দেয়। আর সে বৈধতা পূর্ণতা পায় ২০০১-এর নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের নির্বাচনী ঐক্যের মাধ্যমে। জনতার আবেগ, চেতনা এবং দাবির বদলে গণতন্ত্রের নামে সামন্তবাদী রাজনৈতিক চর্চায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গটা একসময় পরিণত হয়েছে নির্বাচনী সমীকরণে। খুব দুঃখজনক এটা।

শাহবাগের গণবিস্ফোরণ কোনো স্বপ্নের মধ্য দিয়ে ঘটেছে, এমনটা মনে হয় না। আমি নিজে কোনো স্বপ্ন নিয়ে সেখানে যাইনি। গিয়েছিলাম একটা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে, যে আকাঙ্ক্ষাটা শহীদ জননী জাহানারা ইমাম তৈরি করে গেছেন। তার আকাঙ্ক্ষা এতটাই অগ্নিরথ যে, দমে যাওয়া মানুষও আমরা নই। লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত আমরা হইনি। ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ, অপমান, উপেক্ষার পরও লক্ষ্যচ্যুত হইনি। হবও না কোনো দিন।

লেখক: প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন