চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় দুই শিক্ষকের মধ্যে হট্টগোল ও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ঘটেছে। এ সময় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক এক শিক্ষককে ‘গলা চেপে ধরব’ বলে তেড়ে যান বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ তুলেছেন প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মু. গোলাম কবীর।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪৪তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ ঘটনা ঘটে। পরদিন বুধবার সুবিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন গোলাম কবীর।
এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও ক্লিপও দৈনিক বাংলার হাতে এসেছে। স্বল্প দৈর্ঘ্যের সেই ক্লিপে দেখা যায়, অধ্যাপক গোলাম কবীর ও ডিন ড. মাহবুবুল হকের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল। এ সময় উপাচার্য তাদের শান্ত হতে বলছিলেন। দুজনের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ডিন উত্তেজিত হয়ে চট্টগ্রামের ভাষায় বলে ওঠেন, ‘গলা চিবি ধইয্যুম এক্কোবারে’ (একবারে গলা চেপে ধরব)। এ সময় বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক হেলাল নিজামী কলা অনুষদের ডিন মাহবুবুল হককে নিবৃত্ত করা চেষ্টা করেন।
অধ্যাপক গোলাম কবীর বলেন, “একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় একটা এজেন্ডা আলোচনার সময় আমি ভিসিকে সাপোর্ট করলাম, ওনার (ডিন) সঙ্গে তখন দ্বিমত হচ্ছিল, হঠাৎ করেই ‘বেয়াদব’, ‘গলা চেপে ধরব’ বলে তিনি আমার দিকে তেড়ে আসেন। অন্য ডিনরা না থামালে তিনি হয়তো শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতেন।”
তিনি বলেন, ‘একটা এজেন্ডা ছিল, লিখিত পরীক্ষা ছাড়া কীভাবে জাতীয় খেলোয়াড়দের নেয়া যায়। তিনি (ডিন) বলছিলেন এভাবে হলে নৈরাজ্য হবে। আমি বললাম, একটা সিস্টেম ডেভেলপ করলে নৈরাজ্য হবে কেন। এভাবে দ্বিমত হতে হতে হঠাৎ তিনি ক্ষিপ্ত ও মারমুখী হয়ে ওঠেন।’
আপনিও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেছেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক কবীর বলেন, ‘পরে আমি প্রতিবাদ জানিয়ে বলি, আপনি এভাবে তেড়ে আসতে পারেন না, এভাবে কথা বলতে পারেন না। একজন শিক্ষক এমনটা করতে পারেন না। এটা কি বিশ্ববিদ্যালয় নাকি কুস্তি খেলার জায়গা? আমি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’
উপাচার্যকে দেয়া চিঠিতেও তিনি একই বিষয় উল্লেখ করেন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘এ ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি। এ অবস্থায় এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকে সুবিচার প্রত্যাশা করছি এবং আমার নিরাপত্তা বিধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মঙ্গল ও বুধবার দুই দিন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হকের মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারও ফোন রিসিভ করেননি।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা