রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. আব্দুল জলিল।
ফাঁসি কার্যকর উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি কারা নিরাপত্তা বাহিনীও বাড়ানো হয়।
এর আগে, গত মঙ্গলবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ হয় আসামিদের। তারপর থেকেই যেকোনো সময় ফাঁসি কার্যকর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ দুই আসামির ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। পরে দণ্ডিত এ দুজনের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে গত ৭ মে ফের রিট আবেদন করেন তাদের স্বজনরা। মঙ্গলবার সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি মো. জাফর আহমেদ ও মো. বশির উল্ল্যার হাইকোর্ট বেঞ্চ।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের আহমেদ। ২ ফেব্রুয়ারি তার মরদেহ বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়। এই হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন। পরে দণ্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন।
তবে আপিলে সাজা কমে যাবজ্জীবন হওয়া দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় বহাল রাখেন।
এদিকে, গত শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে বুকে ব্যথা উঠলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর আগে, গত ১৯ জুলাই রাজশাহী জেলা কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি ২৫ জুলাই রাতে কার্যকর করা হবে। এর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানান আসামিরা। তবে তা নাকচ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
গত ২ মার্চ এ দুজনের ফাঁসি এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করেন সর্বোচ্চ আদালত।
নিম্ন আদালতে দুজনের মৃত্যুদণ্ডের যে রায় এসেছিল তাই বহাল থাকে আপিলে, খারিজ হয় রিভিউ আবেদনও। তাই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা ছাড়া আর কোনো পথই খোলা ছিল না তাদের। তবে এরপরও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় দণ্ডিত এ আসামির ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে গত ৭ মে ফের রিট আবেদন করেন তাদের স্বজনরা। সর্বশেষ আবেদনও মঙ্গলবার আপিল বিভাগে খারিজ হওয়ায় রাবি অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলার আসামি ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমকে ফাঁসির কাষ্ঠে যেতেই হলো
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা