আপডেট : ৭ অক্টোবর, ২০২২ ১৬:৩৮
ওয়েটার থেকে অবৈধ বারের মালিক মুক্তার শত কোটি টাকার মালিক

ওয়েটার থেকে অবৈধ বারের মালিক মুক্তার শত কোটি টাকার মালিক

ছবি: দৈনিক বাংলা

২০০৮ সালেও বারিধারায় এভিলিয়ন নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ শুরু করেন। এক বছর পর গুলশান-২ লেকভিউ নামের আরেকটি রেস্টুরেন্টেও একই কাজ করেছেন। তারপর কৌশলে বাগিয়ে নিয়েছেন মদের বারের লাইসেন্স। আর সেই লাইসেন্সের আড়ালে আবারও পাঁচটি অবৈধ বার চালিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মুক্তার আলীর নামের এক ব্যক্তি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, সেই টাকা দিয়ে দেশে বাড়িগাড়ি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে করেছেন অঢেল সম্পদ। সেখানে রেখেছেন স্ত্রী সন্তানকেও। সেই মুক্তার আলীকেই খুঁজছেন তারা। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতভর রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গরিবে নেওয়াজ রোডে অবস্থিত একটি ভবনে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে সেখান থেকে ৫০০ বোতল মদ এবং ছয় হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করে। ওই ভবনে কিংফিশার রেস্টুরেন্টের নামে একটি অবৈধ ‘বার’ চালিয়ে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক মুক্তার হোসেন। মুক্তারকে না পেলেও সেখান থেকে ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, কিংফিশার রেস্টুরেন্টের বারের লাইসেন্স আছে।

শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাদের কাছে তথ্য আসে, উত্তরার ওই বাসাতে শত শত ছেলেমেয়ে গানবাজনার নামে ডিজে পার্টি করছে। সেখানে প্রচুর পরিমাণে মদ বিক্রি হচ্ছে।

ডিবি প্রধান বলেন, প্রথমে বাড়িটির সাততলায় গিয়ে তারা দেখেন, অনেক ছেলেমেয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। পরে ভেতরে গিয়ে দেখেন, সেখানে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি মদ ও বিয়ার মজুত রয়েছে। পঞ্চম ও ষষ্ঠতলায় গিয়েও একই অবস্থা দেখতে পান। সব বিদেশি মদ ও বিয়ার একত্রিত করে কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায় যে, এগুলো তারা কীভাবে দেশে নিয়ে এসেছেন? কিন্তু তারা বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় সেখান থেকে ৩৫  জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় তাদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

ভবনটিতে বারের কার্যক্রম কীভাবে চলত জানতে চাইলে ডিএমপির ডিবিপ্রধান বলেন, কিংফিশার রেস্টুরেন্টের নামে ওই ভবনের এসব কার্যক্রম (বার) চলত। তাদের মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জসহ আরও পাঁচটি এমন বার রয়েছে।

মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, মালিক ও ম্যানেজারসহ অনেককে মামলায় আসামি করা হয়েছে। মুক্তার পলাতক। তাকে খোঁজা হচ্ছে।

বার চালানোর সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো কোরিয়ান নাগরিক জড়িত কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা যাচাই-বাছাই করছি। বারে কারা যাতায়াত করত সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।