আপডেট : ২১ আগস্ট, ২০২৩ ১৫:৫৪
খুলনায় চার চিকিৎসক সিআইডির হাতে আটক
খুলনার ব্যুরো

খুলনায় চার চিকিৎসক সিআইডির হাতে আটক

খুলনায় চার চিকিৎসককে সিআইডি পরিচয়ে বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তাদের কী কারণে আটক করা হয়েছে, তা এখনো জানেন না তাদের পরিবারের সদস্যরা। গত ১৮ আগস্ট আটকের পর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা বিএমএ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় আটক চিকিৎসকদের পরিবার।

ওই চার চিকিৎসকের মধ্যে তিনজন নারী চিকিৎসক রয়েছেন। তারা হলেন শর্মিষ্ঠা মণ্ডল, নাজিয়া মাহজাবিন, মুসতাহিন হাসান ও লুইস সৌরভ সরকার। এদের মধ্যে শর্মিষ্ঠা মণ্ডল খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও লুইস সৌরভ সরকার মেডিকেল অফিসার। অন্যরা প্রাইভেট প্রাকটিস করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৮ আগস্ট ভোরের দিকে সিআইডি পরিচয়ে ওই চিকিৎসকদের বাড়িতে যান একদল লোক। পরে জোর করে একটি সাদা মাইক্রোতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কেন বা কী কারণে চার চিকিৎসককে নিয়ে যাওয়া হয়, তা চিকিৎসকদের পরিবারকে জানানো হয়নি। নিয়ে যাওয়ার সময় যোগাযোগ করার জন্য একটি মোবাইল নম্বর দেয়া হয়। তবে ওই নাম্বারে কল করা হলে কেউ ধরছেন না।

চিকিৎসদের পরিবার জানায়, কৃতিত্বের সঙ্গে জিপিএ-৫ নিয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছেন আটক হওয়া চিকিৎসকরা। সব পরীক্ষাতেও ভালো ফলাফল করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে যে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সত্য নয়। তবে ওই চার চিকিৎসক ‘থ্রি ডক্টরস’ নামের একটি মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টারে কোচিং করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা জেলা নেতা ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক নিয়াজ মুস্তাফী চৌধুরী বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা একটি মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। ওই ব্যাপারটি নিয়ে কারও কোনো আপত্তি নেই। ওই চিকিৎসকরা যদি এর সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে তাদের শাস্তি হোক। তবে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কারও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ব্যাপারটি খুবই উদ্বেগের। তাদের বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেটি পরিবার ও গণমাধ্যমের কাছে পরিষ্কার করা উচিত।

মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার ব্যাপারে সন্দেহ করা হচ্ছে। যে কোচিং সেন্টারে তারা মেডিকেল ভর্তি কোচিং করেছিলেন, সেই কোচিং সেন্টারের উপদেষ্টা চিকিৎসক ইউনুচ উজ্জামান খাঁন ওরফে তারিমকে আটক করেছে ঢাকা সিআইডি। ওই তিন নারী চিকিৎসক ১৫ সালে ওই কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন। আর লুইস সৌরভ সরকার ছিলেন ১২ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থী। বর্তমানে লুইস সৌরভ ওই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক।

খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, প্রায় দেড় মাস আগে সিআইডি থেকে অধ্যক্ষকে চিঠি দেয়া হয়। তাতে ২০১৫ সালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে খুমেকে ভর্তি হয়েছে এমন ১১ জন শিক্ষার্থীর একাডেমিক তথ্য চাওয়া হয়। গত ১৬ জুলাই অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে ওই ১১ শিক্ষার্থীর তথ্য সিআইডিকে দেয়া হয়েছে। যে তিনজন নারী চিকিৎসককে সিআইডি আটক করেছে, তারাও ওই ১১ জনের তালিকাভুক্ত।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. দীন-উল-ইসলাম বলেন, ‘সিআইডির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তথ্য প্রদান করেছি। ওই সব শিক্ষার্থীরা যদি ফাঁস হওয়া প্রশ্নে এখানে ভর্তি হন, তাহলে রাষ্ট্রীয় আইন মোতাবেক তাদের শাস্তি হোক।’