আপডেট : ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ১১:৩৭
সড়ক নির্মাণের দুই মাসেই খানাখন্দ
প্রতিনিধি, বরগুনা

সড়ক নির্মাণের দুই মাসেই খানাখন্দ

সড়ক নির্মাণের দুই মাসের মাথায় খানাখন্দ। সম্প্রতি বরগুনার তালতলী উপজেলায়। ছবি: দৈনিক বাংলা

সড়ক নির্মাণের দুই মাসের মাথায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। হাতের খোঁচা ও অটোরিকশার চাকায় সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে। সড়কে গর্ত হয়ে মাটি বের হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় সড়কের এমন বেহাল দশা। ঘটনাটি বরগুনার তালতলী উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সড়কে। নিম্নমানের কাজ করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, তালতলী উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের স্লুইস বাজার জিপিএস থেকে চেয়ারম্যানহাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তা। এ সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বরগুনা ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্র আহ্বান করে। দুই ধাপে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৪ টাকা ব্যয়ে ওই কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেলোয়ার হোসেন-মোমিনুল হক (জেভি) ও মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই অর্থবছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা কিন্তু ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন-মোমিনুল হক ২০২০ সালের শেষের দিকে কাজ শুরু করে। কিছুদিন কাজ করে ওই কাজ তারা বন্ধ করে দেন।

প্রায় ৬ মাস ঠিকাদার কাজ ফেলে রাখেন বলে জানান স্থানীয়রা। এ ঠিকাদার কাজ করতে অসম্মতি প্রকাশ করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পুনরায় ওই কাজের দরপত্র আহ্বান করে। দ্বিতীয় দরপত্রে কাজ পায় বরগুনার মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ অনুযায়ী এ বছরের ৩০ জুন সড়কের কাজ সম্পন্ন করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নির্মাণের দুই মাস যেতে না যেতেই সড়কটি খানাখন্দে পরিণত হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় সড়কের এমন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। নিম্নমানের কাজ করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর। স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টির মৌসুম যেতে না যেতেই এ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাবে।

পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, ‘নির্মাণ শুরুতেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছে ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু তারা তা আমলে নেয়নি। এলজিইডি ও ঠিকাদারের যোগসাজশে সড়কে এমন কাজ হয়েছে।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইলমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মহিবুল ইসলাম তনু বলেন, ‘সড়কটির কাজ আমি করিনি, আমার লাইসেন্সে মো. ফরহাদ জোমাদ্দার নামের এক ঠিকাদার কাজ করেছে। রাস্তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও আমি অবগত নই।’

সাব-ঠিকাদার ফরহাদ জোমাদ্দার সড়কে খানাখন্দের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়মানুসারে আমি কাজ করেছি। আমার কাজে কোনো ত্রুটি ছিল না।’

এলজিইডির তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে নির্বাহী প্রকৌশলী ওই রাস্তাটি পরিদর্শনে আসবেন। তিনিই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।’

বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জি বলেন, ‘ওই সড়ক পরিদর্শনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’