বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শেরেবাংলা হলের ক্যানটিন পরিচালক সুমন ও তার কর্মচারীরা ক্যানটিন বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে ক্যানটিন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
গত বুধবার রাতের খাবার পরিবেশনের পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই খোঁজ নেই সুমন ও তার কর্মচারীদের। তারা হলের ক্যানটিন পরিচালনার দায়িত্ব চলতি মাসের আগস্ট থেকে শুরু করেন। ক্যানটিনের দায়িত্বরত বাবুর্চি বেলাল নতুন পরিচালকের পলায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ক্যানটিনের বাবুর্চি বেলাল জানান, হলের ক্যানটিন চালাতে গিয়ে লোকসান ও ঋণের সম্মুখীন হন সুমন। গতকাল বৃহস্পতিবার মাসের শেষ দিন, ক্যানটিনে আয়-ব্যয়ের হিসাব করা হবে, যথাযথ হিসাব দিতে পারবে না বলে এবং ক্যানটিনের গ্যাস মালিকদের ও অন্যদের টাকা পরিশোধ করার চাপ সহ্য করতে না পেরেই সে ও তার লোকেরা পালিয়েছে।
দুপুরে ক্যানটিন চলবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সুমন ও তার লোকেরা পালিয়ে যাওয়ার কারণে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় রান্নার জন্য তরকারি ও গ্যাস কেনা সম্ভব না। এই মুহূর্তে রান্নার কাজে হাত দিতে পারছি না। আপাতত ক্যানটিন বন্ধ থাকবে।’
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, ‘গতকাল ঘুম থেকে ওঠার পর ক্যানটিনে গিয়ে দেখতে পাই, পরিচালক ও তার লোকেরা পালানোয় ক্যানটিন বন্ধ। এমতাবস্থায় আমাদের অন্য হলের ক্যানটিন ও বাইরের হোটেল থেকে খাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এ ভোগান্তি দূর করার জন্য কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের চার থেকে পাঁচজন আবাসিক শিক্ষার্থী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমাদের হলের ক্যানটিনে খাবার সমস্যা দীর্ঘদিনের। নতুন পরিচালক এসে খাবারের মান কিছুটা ভালো করেছিলেন কিন্তু এর আগের পরিচালক ও বর্তমান বাবুর্চি বেলাল গ্যাস, মুদি, সবজি ও মাছসহ বিভিন্ন দোকানে হাজার হাজার টাকার ঋণ। ওই সব দোকানিরা টাকার জন্য তাগাদা দিতে আসতেন। এতে নতুন পরিচালকের সঙ্গে ঝামেলা হতো আগের পরিচালক বেলালের। পুরাতন মালিক বেলাল পরিচালনার দায়িত্ব নামে ছাড়লেও সেই এখনো পরিচালক। পুরাতন পরিচালকের ধারদেনার চাপেই নতুন পরিচালক চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বেলালকে ক্যানটিন থেকে বিতাড়িত করা ছাড়া এ সমস্যা সমাধান হবে না।
আগের পরিচালক বেলালের (বর্তমান বাবুর্চি) কাছে তার ধারদেনার বিষয়ে জানতে চাইলে দৈনিক বাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার ধারদেনা আমি শোধ করব, অনেকটা শোধ করেও দিয়েছি। বাকি যা আছে আস্তে আস্তে শোধ করব। নতুন যারা আসছিলেন আমার ধারদেনার সঙ্গে তাদের কোনো কারবার নেই। তারা নিজেরাই নতুন দেনা করে পালিয়ে গেছেন। আমার বেতন পর্যন্ত দিয়ে যাননি তারা।’
শেরেবাংলা হলের নতুন ক্যানটিন পরিচালক সুমনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে দ্রুতই বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা