টানা তিন মাস নিষেধাজ্ঞার পর বনজীবী ও পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে সুন্দরবনের দুয়ার। শুক্রবার উন্মুক্ত করা হয় সুন্দরবন। এদিন সকাল থেকে পর্যটক ও জেলেদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ।
সুন্দরবনে প্রবেশে দীর্ঘ তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বনের ওপর নির্ভরশীল জেলে-মৎস্যজীবীরা মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। সুন্দরবনের ওপর নির্ভর ব্যবসায়ীরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন ক্ষতি পুষিয়ে প্রত্যাশা ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা তাদের।
প্রতিবছর তিন মাস (জুন-আগস্ট) সুন্দরবনে সব ধরনের রাজস্ব আহরণ বন্ধ রাখে বন বিভাগ। সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা, বন্য প্রাণী এবং নদী-খালের মাছের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় ওই পদক্ষেপ নেয়া হয়। ২০১৯ সাল থেকে নেয়া ওই কার্যক্রমে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলসহ নদী ও খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে।
সেই নিয়ম অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। গতকাল থেকে পর্যটকরা ফের যেতে পারছেন বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বনে। বনের ওপর নির্ভরশীল জেলেরাও যাচ্ছেন তাদের জীবিকার অন্বেষণে।
সুন্দরবনসংলগ্ন পোড়াকাটলা গ্রামের বনজীবী আব্দুল আলিম বলেন, ‘মহাজনের কাছ থেকে সুদের টাকা নিয়ে বনে যাচ্ছি। মাছ ধরার পাসের সময় অল্প হওয়ায় যে টাকা দিয়ে জাল-নৌকা ঠিক করেছি সেই টাকা উসুল করতে পারব কি না, জানি না।’
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোলিনী ট্যুরিস্ট ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হালিম বলেন, ‘চলতি মৌসুম শুরুর আগে ট্রলারগুলো মেরামত ও রং করা হয়েছে। আজ (শুক্রবার) থেকে আবার পর্যটক নিয়ে তারা সুন্দরবনের ভ্রমণ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। আগের চেয়ে বর্তমানে খরচ বেড়েছে, এ জন্য ট্রলার ভাড়া আগের চেয়ে কিছুটা বাড়ানো হবে। এ ছাড়া তিন দিনের প্যাকেজ রেটে পরিবর্তন আনা হবে।’
তিনি জানান, গত তিন মাস অনেক পর্যটক সুন্দরবন ঘুরতে এলেও তারা বনে ঢুকতে পারেননি। তিন মাস ট্রলারগুলো ঘাটে বসেছিল। এ জন্য আর্থিকভাবে তাদের লোকসান হয়েছে। এই মৌসুমে লোকসান কাটিয়ে ওঠার প্রত্যাশা তার।
পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা অঞ্চলের সহকারী বন সংরক্ষক কর্মকর্তা এ কে এম ইকবাল হুসাইন চৌধুরী জানান, তিন মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল সকাল থেকে পর্যটক ও জেলেদের জন্য খুলছে সুন্দরবনের দ্বার। ইতোমধ্যে জেলে, ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ ও বোটচালকরা সুন্দরবনে যাত্রা শুরু করেছেন।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা