আপডেট : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২১:৫৭
বিবৃতি দিয়ে দেশের বিচারিক কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান ঢাবি নীল দলের
প্রতিনিধি, ঢাবি

বিবৃতি দিয়ে দেশের বিচারিক কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান ঢাবি নীল দলের

অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দেশের শ্রম আদালতে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়া স্থগিত করার দাবিতে বিভিন্ন দেশের ১৬০ জন ব্যক্তির দেওয়া খোলা চিঠি নিয়ে এবার মুখ খুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।

তাদের আশা, ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিদাতারা বাংলাদেশের আইন-কানুন ও রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন এবং আইনগত ও সাংবিধানিক বিধি-বিধান অনুধাবন করবেন।

এসময় তারা ‘অযাচিত ও অনভিপ্রেত বিবৃতি’ দিয়ে বাংলাদেশের বিচারিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

রোববার সন্ধ্যায় নীল দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়। নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ আলী এবং অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তির নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৬৬ জন শিক্ষকের নাম যুক্ত করা হয়।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বার্থরক্ষার্থেই এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে দাবি করে নীল দল বলছে, ‘বিবৃতিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর আক্রমণ চলছে বলে যে দাবি করা হয়েছে তা অমূলক ও ভিত্তিহীন। দেশের প্রচলিত আইনে চলমান একটি মামলা নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পরিপন্থি। এটি আন্তর্জাতিক আইন, রীতিনীতি ও শিষ্টাচার বিবর্জিত এবং একটি রাষ্ট্রের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও সার্বভৌমত্বকে অসম্মান প্রদর্শনের শামিল। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এবং সার্বভৌমত্বের ওপর এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিবৃতিদাতারা নিজ নিজ দেশের আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও নীতিনিষ্ঠ নাগরিক হিসেবে পরিচিত। ফলে এ ধরনের পক্ষপাতমূলতক বক্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের নীতি ও আদর্শকেই তারা অস্বীকার করেছেন। অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও গ্রেপ্তার হয়ে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। অথচ বাংলাদেশের বিষয়ে তাদের অবস্থান আইনের শাসন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের ব্যাপারে বৈপরীত্য নির্দেশ করে।’

বিবৃতিতে নীল দলের শিক্ষকরা বলেছেন, ‘একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে আইন যে তার স্বনিয়মে পরিচালিত হয়, সেই স্বাভাবিক বিষয়টিকে বিবেচনায় না নিয়ে নিরপেক্ষ বিচারকদের একটি প্যানেল দ্বারা অভিযোগের পর্যালোচনা করা হলে নিশ্চিতভাবে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা দুর্নীতিবিরোধী এবং শ্রম আইনের মামলাগুলো হতে তিনি খালাস পাবেন বলে বিবৃতিদাতাগণ যে দাবি করেছেন, তার মধ্য দিয়ে চলমান বিচারিক কার্যক্রম প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে এবং ন্যায়বিচারকে ব্যাহত করবে।’

নীল দলের দাবি, ‘প্রচলিত রাষ্ট্রীয় আইন ও বিচারিক নীতিমালাকে লঙ্ঘন করে একজন ব্যক্তির স্বার্থরক্ষার এ ধরনের প্রচেষ্টা নজিরবিহীন ও পক্ষপাতিত্বমূলক।’

বিচার প্রক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে ড. ইউনূস বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিযোগ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এর আগেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নোবেলজয়ীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কোনো কোনো নোবেলজয়ী দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। এসব নোবেল বিজয়ী আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আদালতের রায় মেনে নিয়েছেন। বিচার প্রক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে তারা কারও দ্বারস্থ হননি।’