মঙ্গলবার তিন মাস বয়সী শিশুর চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এসেছিলেন হাটহাজারীর বাসিন্দা মো. রহিম উদ্দিন। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে ছিল সদ্য ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের এক লাখ ৯০ হাজার টাকা ও স্ত্রী-সন্তানের চিকিৎসাপত্র। হাসপাতালে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা থেকে নামার সময় ভুলে ব্যাগটি গাড়িতেই ফেলে আসেন তিনি। বিষয়টি বুঝতে পারার পর যেন আকাশ ভেঙে পড়ে তার মাথায়। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যকে জানালে তারা পুলিশ ফাঁড়িতে জানানোর অনুরোধ করেন। তখন চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ জানান রহিম।
তার অভিযোগ পেয়ে তৎক্ষণাৎ বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পায় পুলিশ। চমেক হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে সিএনজি অটোরিকশাটির নম্বর সংগ্রহ করে তারা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সহযোগিতায় অটোরিকশাটি চিহ্নিত করে চালক ও মালিকের তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশ। পরে চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ নথিসহ ব্যাগটি উদ্ধার করে ভুক্তভোগী রহিমের হাতে তুলে দেয় তারা।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল আলম আশেক বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এর পরপরই দ্রুত ট্রাফিক বিভাগের মাধ্যমে সিএনজি অটোরিকশাটি চিহ্নিত করি। পরে চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কাছ থেকে ব্যাগটা উদ্ধার করা হয়েছে। শুরুতে চালক অস্বীকার করলেও একটু পর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার যান তিনি।’
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করেন ভুক্তভোগী রহিম উদ্দিন। তিনি জানান, বাচ্চার চিকিৎসা ও কিছু ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য কয়েকদিন আগে ঋণটা নিয়েছিলেন পারিবারিকভাবে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বাচ্চার চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে এসেছিলেন।
এক পাওনাদারকে কিছু টাকা দেওয়ার কথা ছিল, তাই সঙ্গে টাকাগুলো ব্যাগে নিয়েছিলেন। হাসপাতালে প্রবেশের পর ব্যাগ নেই দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। পরে পুলিশকে জানালে তারা তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিয়ে টাকাটা উদ্ধার করে দেয়।
তিনি বলেন, ‘টাকাটা হারানোর পর দুনিয়াদারী অন্ধকার হয়ে আসছিল। পুলিশ দ্রুত টাকাটা উদ্ধার করে দিয়েছে, তাদের কাছে কৃতজ্ঞ আমি। বিশেষ করে উপপরিদর্শক সোহেল সাহেব অনেক কষ্ট করেছেন, ওনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’
এই ঘটনায় পুলিশের প্রতি তার ধারণাই বদলে গেছে বলে জানান রহিম উদ্দিন।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা